অকুল পাথার
অকুল পাথার (সীমাহীন দুর্ভোগ) = অল্প বয়সে মেরিনার স্বামী মারা যাওয়াতে সে এখন অকুল পাথারে পড়েছে।
একচোখা
একচোখা (পক্ষপাতদুষ্ট) = নিজের ছেলের দোষ তার চোখেই পড়ে না, সে আসলে একচোখা।
ঊনপঞ্চাশ বায়ু
ঊনপঞ্চাশ বাবু (পাগলামী) = পরীক্ষা সামনে চলে আসাতে তাকে এখন ঊনপঞ্চাশ বায়ুতে পেয়েছে।
তুলসী বনের বাঘ
তুলসী বনের বাঘ (ভন্ড) = শোকটা মুখে এক কথা বলে, কাজে করে অন্যটা, সে আসলে তুলসী বনের বাঘ।
চিনির পুতুল
চিনির পুতুল (শ্রমকাতুরে/অলস) = ছাত্র জীবন অধ্যয়নের সময়, চিনির পুতুল হলে চলবে না।
কণ্ঠ পর্যন্ত
আকন্ঠ।
ঈষৎ পরিমাণ উষ্ণ যাহা
ঈষদুষ্ণ।
একই গুরুর শিষ্য যারা
সতীর্থ।
প্রিয় বাক্য বলে যে নারী
প্রিয়ংবদা ।
জানতে ইচ্ছুক
জিজ্ঞাসু।
স্বল্প
= সু + অল্প
সংস্কার
= সম + কার
পুরস্কার
= পুরঃ + কার
অন্বয়
= অনু + অয়
গবেষণা
= গো+ এষণা
প্রায়শ
= কদাচিৎ
প্রকাশ্য
= গোপনীয়
বাচাল
= স্বল্পভাষী
সজীব
= নির্জীব
সঞ্চয়
= খরচ
“নারীর ক্ষমতায়ন”
ভূমিকাঃ এই পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই মহান সৃষ্টিকর্তা নারী ও পুরুষকে সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবী সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর বক্ত উন্নয়ন, সাধিত হয়েছে এতে নারী ও পুরুষের সমান অংশগ্রহণ রয়েছে। মানুষ যতই সভা হচ্ছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ ততই বেড়ে চলছে। তাই আজ বাংলাদেশ সহ বিশ্বের রাষ্ট্র ব্যবস্থার নিয় তাকালে দেখতে পাই যে সর্বত্রই নারীর জয়গান। তাদের অংশগ্রহণ ও সুদৃঢ় নেতৃত্বে রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও রাষ্ট্রযন্ত্র ক্রমান্বয়ে উন্নতি শিখরে উঠছে।
নারীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশঃ বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (WEF) ২০১৬ এর রিপোর্টে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ ১৪৪ দেশের মধ্যে ৭২তম। ২০১৫ সালে ছিল ৬৪তম। আর ২০১৪, ২০১৩, এবং ২০১২ সালে অবস্থান ছিল যথাক্রমে ৬৮, ৭ এবং ৮৬ তম। তবে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় সবার শীর্ষে।
রাজনৈতিক ক্ষমতায়নঃ বাংলাদেশ রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে অন্যান্য সেক্টরের চেয়ে এগিয়ে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ২০১ প্রদত্ত রিপোর্টে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম। ২০০৬ সালে এর অবস্থান ছিল ১৭তম। গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশের শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র সভাপতি পদে নারী। রাজনীতির লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাস করে আঞ্চলিক নেতৃত্বে সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ মর্যাদাপূর্ণ ওসেন ইন পার্লামেন্টস (WIP) গ্লোবা ফোরাম অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছে।
জাতীয় সংসদে নারীঃ বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রদত্ত রিপোর্ট অনুযায়ী জাতীয় সংসদে নারীর অংশগ্রহণে বাংলাদেশ বিদে ৭৪তম। বর্তমানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, সংসদ নেতা শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা সৈ সাজেদা চৌধুরী, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদসহ ৭০ জন নারী প্রতিনিধি রয়েছে। যার মধ্যে ২০ জন সরাস জনগণের ভোটে নির্বাচিত।
মন্ত্রীসভায় ও প্রশাসনে নারীঃ বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রদত্ত রিপোর্ট অনুযায়ী মন্ত্রীসভায় নারীর অবস্থানের দিক দিয়ে ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৪তম। নব্বই এর দশক থেকে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে লিখিত জব (জানু-২১)-৫ মন্ত্রীসভার প্রধান অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নারী হয়ে আসছেন। বর্তমানে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত মন্ত্রীসভায় ৫ জন মারী রয়েছে। তাঁরা হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। প্রশাদ কর শীর্ষ পদে এ পর্যন্ত ১৮ জন নারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। যার মধ্যে ৭ জন বর্তমানে দায়িত্বরত। বর্তমানে সরকারি চাকুরীতে ২৭.৩৬% নারী রয়েছে। যা ২০১১ সালে ছিল ২২.৪০%। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে প্রথম বারের মতো একজন নারী কমিশনার কবিতা খানম-কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিশু একাডেমির মহাপরিচালকও নারী সেলিনা হোসেন।
বিচার বিভাগে নারীঃ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এ বর্তমানে নারী বিচারপতি রয়েছেন ৮ জন। যার মধ্যে একমাত্র আপিল বিভাগের নারী বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। বেলজিয়ামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইসমত জাহান “নারীর বিরুদ্ধে বৈষম্য বিলুপ্ত কমিটির (বিভো)" সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।
সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নারীঃ দেশের বিভিন্ন সামাজিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে শীর্ষপদে নারীর অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আইন ও সালিস কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক দীপা হাফিজা, পিআইবি'র ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা সুলতানা, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (CPD) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। দ্রুতী সমাজ কল্যাণ সংস্থার প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টি (ব্লাস্ট) এর নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস বাংলাদেশ (রিইব) এর নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুরতা উল্লেখযোগ্য।
পুরুষ নির্ভর অর্থনীতি, নিম্ন শিক্ষার হার, ধর্মীয় গোড়ামী, দুর্বল সামাজিক মূল্যবোধ, পারিবারিক বৈষম্য, ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা আমাদের দেশে নারীর ক্ষমতায়নে সবচেয়ে বড় বাধা। নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপঃ
চতুর্থবারের মতো জার্মানির চ্যান্সেলর হয়েছেন অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। সিঙ্গাপুরের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হালিমা ইয়াকুব। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ প্রদান করেন ২০১৭ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর। তিনিই একমাত্র বাংলাদেশের সরকার প্রধান যিনি পরপর জবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার নজির স্থাপন করেছেন।
উপসংহারঃ বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে যে সকল দেশ এগিয়ে, সে সকল দেশের সফলতার মূলে রয়েছে অর্থনৈতিক অগ্রগতি। উচ্চ শিক্ষার হার এবং সর্বোপরি সামাজিক সচেতনতা। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (WEF) ২০১৬ এর রিপোর্টে নারীর ক্ষমতায়নে শীর্ষে পাঁচটি দেশ যথাক্রমে আইসল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন এবং নিউজিল্যান্ড। উক্ত রিপোর্টে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৪টি দেশের মধ্যে ৭২তম। তবে আশার কথা হলো নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে। নারীর ক্ষমায়তনে গুণগত দিক দিয়ে এগিয়ে ভারত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দল জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিনা লাগার্দ বর্তমান বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।