কাষ্ঠ হাসি
কাষ্ঠ হাসি (কপট হাসি): মহাজনের কাষ্ঠ হাসি দেখে লাভ নেই-সময় হলেই টের পাবে।
বিদুরের খুদ
বিদুরের খুদ (ভক্তি সহকারে সামান্য বস্তু প্রদত্ত): এটি বিদুরের খুদ হলেও আমার জীবনে তা খুব উপকারে আসবে।
শিরে সংক্রান্তি
আসন্ন বিপদ।
লম্ব দেওয়া
লম্ব দেওয়া (চম্পট দেওয়া বা পালিয়ে যাওয়া): সব টাকা নিয়ে বাদশা এলাকা থেকে লম্ব দিয়েছে।
ডামাডোল
ডামাডোল (গোলযোগ): রাজনীতির ডামাডোলে অনেকেই আখের গুছাতে ব্যস্ত ।
অন্যাবশ্যকীয় ব্যাপারে কৌতুহল ভাল নয়
অনাবশ্যকীয় ব্যাপারে কৌতুহল ভাল নয়।
= অনাবশ্যক ব্যাপারে কৌতূহল ভালো নয় ।
কবির শোক সভায় বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবিরা শ্রদ্ধাঞ্জরী জ্ঞাপন করেছে
কবির শোক সভায় বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবিরা শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপন করেছে।
= কবির শোক সভায় বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীগণ শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেছেন।
তারা যাইতে এ দৃশ্য দেখিয়া মুগ্ধ ও বিষ্মিত হল
তারা যাইতে যাইতে এ দৃশ্য দেখিয়া মুগ্ধ ও বিস্মিত হল।
= যেতে যেতে এই দৃশ্য দেখে তারা মুগ্ধ ও বিস্মিত হলো।
সাধারণ জন গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে চলে।
সাধারণ জন গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে চলে ।
= সাধারণ জন গড্ডলিকা প্রবাহে ভেসে চলে ।
সব ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের আতিথ্য সৎকার করা উচিত?
সব ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের আতিথ্য সৎকার করা উচিত।
= ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের আতিথি সৎকার করা উচিৎ।
Charter
Charter (সনদ; চুক্তি): Madina charter was the first charter in the world.
Ombudsman
Ombudsman (অভিযোগের তদন্তের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি): A new ombudsman was appointed for the commission last night.
Sub- judice
Sub-judice (বিচারাধীন): The murder case is still Sub-judice.
Referendum
Referendum (গণভোট): The issue was decided by referendum.
Embargo
Embargo (অবরোধ; নিষেধাজ্ঞা): I lay no embargo on anybody's words.
ডেল্টা প্লান
ডেল্টা পরিকল্পনা হলো দীর্ঘমেয়াদি, একক এবং সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা। দীর্ঘমেয়াদি বলতে বোঝায় পরিকল্পনার লক্ষ্য ২১০০। একক হল দেশের সব পরিকল্পনার আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যমে একক ডেল্টা। সমন্বিত বলতে বোঝায় পানি সম্পর্কিত সকল খাতকে একটি পরিকল্পনায় নিয়ে আসা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও পানির নিরাপত্তা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় তৈরি হওয়া শত বছরের ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বা ডেল্টা প্লান। ডেল্টা পরিকল্পনা, কৌশল সমূহের টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে ডেল্টা ভিশনে পৌঁছাতে সাহায্য করে। জলবায়ু পরিবর্তন এ সময়ে খুবই আলোচিত বিষয়, যার প্রভাবের ফলাফল আমরা এখন তিক্ততা নিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগ করছি।
একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন পরিকল্পিত পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। তবে পরিকল্পনাগুলো স্বল্পমেয়াদি, না দীর্ঘমেয়াদি হবে ১১ এটি নির্ভর করে কাজের প্রকৃতির ওপর। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ মহাপরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে। এর মাধ্যমে যেটি স্পষ্ট তা হলো, বাংলাদেশ এখন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের প্রতি আগ্রহী মা হয়ে উঠছে। এটি আমাদের জন্য আশাবাদী হওয়ার মতো একটি বিষয়। এই শত বছরব্যাপী পরিকল্পনার মাধ্যমে বন্যা, নদীভাঙন, নদী শাসন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামের পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাপনার কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে। ইংরেজি শব্দ ডেল্টা অর্থ ব-দ্বীপ। বাংলাদেশ পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ব-দ্বীপ অঞ্চল ও নদীমাতৃক দেশ হিসেবে নদী ব্যবস্থাপনা ও এর উন্নয়নের ওপর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নির্ভর করছে। বাংলাদেশে আবহাওয়া বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে আমাদের দেশে অনেক অঞ্চল প্লাবিত হয়। এই পানির প্রায় ৯২ শতাংশ চীন ও ভারতের মতো উজানের দেশগুলো থেকে আসে। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে বাংলাদেশের কৃষিসংক্রান্ত অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া মানুষের জীবনযাত্রায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশের বর্ষা মৌসুমে প্রায় ৮০ শতাংশ পানি অন্যত্র চলে যাওয়ায় পানির অপচয় ঘটে, যেটা ধরে রেখে খরার সময় কাজে লাগানো যায়। অন্যদিকে গ্রীষ্মকালে অনেক সময় বাংলাদেশকে খরার মধ্যে পড়তে হয়। এর ফলে পানির অভাবে কৃষি উৎপাদন ও মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যাগুলো কিভাবে পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমাধান করা যায় তার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন ডেল্টা প্ল্যান বা ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আমাদের দেশের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গায় পানির স্তর ৪-১০ মিটার পর্যন্ত কমে গেছে। গবেষণার মাধ্যমে বৃষ্টি ও বন্যার পানিকে কিভাবে সংরক্ষণ করে দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহার করা যায়, তা এই মহাপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। ওয়াটার হার্ভেস্টিং সিস্টেমের বিভিন্ন প্রযুক্তি গবেষণার মাধ্যমে বিচার-বিশ্লেষণ করে আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে তা প্রয়োগ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গবেষণা যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। এ জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানকে এর সঙ্গে সংযুক্ত করা প্রয়োজন। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর যাতে নিচে নেমে যেতে না পারে, সে বিষয়েও বিভিন্ন পরিকল্পনা ও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। নদীভাঙন বাংলাদেশের একটি অন্যতম সমস্যা। এর ফলে প্রতিবছর ৫০ হাজার পরিবার যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি পাঁচ হাজার হেক্টর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পৃথিবীতে সয়েল ইরোশন বা মাটির ক্ষয় কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা চললেও আমাদের দেশে এ নিয়ে উল্লেখ করার মতো কোনো গবেষণা নেই। আমেরিকার সয়েল অ্যান্ড ওয়াটার কনজার্ভেশন সোসাইটি বিভিন্ন ধরনের মাটির ক্ষয় রোধের প্রযুক্তি বের করেছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও মাটির ক্ষয় রোধে গবেষণার কাজ চলছে। এখান থেকে ধারণা নিয়ে কিভাবে আমরা নিজস্ব পদ্ধতিতে মৌলিক ও ফলিত গবেষণার মাধ্যমে নদীভাঙন রোধ করতে পারি, সে বিষয়টি নিয়ে আরো বেশি করে ভাবার সময় এসেছে।
বিভিন্ন পরিবর্তন ও পরিবর্তনের উপাদানগুলো বিবেচনা করে এগুলোর ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। এর সঙ্গে নিরাপদ পানির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে এনে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি প্রযুক্তিগত ও আর্থ-সামাজিক কর্মকৌশল গ্রহণ করে এটিকে এ পরিকল্পনার মধ্যে আনতে হবে। এ পরিকল্পনায় ছয়টি হটস্পট নির্ধারণ করে সেখানে ৩৩ ধরনের চ্যালেঞ্জ শনাক্ত করা হয়েছে। হটস্পটগুলো হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চল, বরেন্দ্র ও খরাপ্রবণ অঞ্চল, হাওর ও আকস্মিক বন্যাপ্রবণ অঞ্চল, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল, নদী ও মোহনা অঞ্চল ও নগরাঞ্চল। এ অঞ্চলগুলোকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কিভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। জীববৈচিত্র্য, সুন্দরবন সংরক্ষণ, বাঁধ-ব্যারাজ সংস্কার ও নির্মাণ, বিভিন্ন নদীতে জেগে ওঠা চর, মোহনার গতিপথ নিয়ন্ত্রণ, জনস্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ ভিশন ২০২১ ও ২০৪১-এর লক্ষ্য অর্জনে সামগ্রিকভাবে এর সঙ্গে যুক্ত প্রধান উপাদানগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ ও নেতৃত্বের মাধ্যমেই ১০০ বছরমেয়াদি এ পরিকল্পনা স্বপ্ন থেকে এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এখন দরকার দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে সবাইকে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একত্রে কাজ করা, তবেই উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হবে ।