মৌলিক অধিকার বলতে বুঝায় নাগরিক জীবনের বিকাশ ও ব্যক্তির জন্য সে সমস্ত অপরিহার্য শর্তাবলি যা সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংবিধান হতে প্রাপ্ত এবং সরকারের নিকট অলঙ্ঘনীয়। মৌলিক অধিকার নাগরিকের জন্মগত অপরিহার্য অধিকার, বা সংবিধানের মাধ্যমে নাগরিকগণ লাভ করে থাকে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে 'সরকারি নিয়োগ লাভে সুযোগের সমতা' সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ সংবিধানের ২৯ (১) নং অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকিবে। সংবিধানের ২৯ (২) কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হইবেন না কিংবা সেই ক্ষেত্রে তাঁহার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাইবে না। সংবিধানের (৩) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুইঃ (ক) নাগরিকদের যে কোন অনগ্রসর অংশ যাহাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মে উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব লাভ করিতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে তাঁহাদের অনুকূলে বিশেষ বিধান প্রণয়ন করা হইতে, (খ) কোন ধর্মীয় বা উপ-সম্প্রদায়গত প্রতিষ্ঠানে উক্ত ধর্মাবলম্বী বা উপ-সম্প্রদায়ভুক্ত ব্যক্তিদের জন্য নিয়োগ সংরক্ষণের বিধান-সংবলিত যে কোন আইন কার্যকর করা হইতে, (গ) যে শ্রেণির কর্মের বিশেষ প্রকৃতির জন্য তাহা নারী বা পুরুষের পক্ষে অনুপযোগী বিবেচিত হয়, সেইরূপ যে কোন শ্রেণির নিয়োগ বা পদ যথাক্রমে পুরুষ বা নারীর জন্য সংরক্ষণ করা হইতে, রাষ্ট্রকে নিবৃত্ত করিবে না।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এ ঘোষণা প্রবাসী মুজিবনগর সরকার পরিচালনার অন্তবর্তীকালীন সংবিধান হিসাবে কার্যকর। এমনকি ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণীত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ ঘোষণা দেশের সংবিধান হিসাবে কার্যকর থাকবে। একটি অতীব সংকটময় অবস্থার মোকাবেলায় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করা হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে সামরিক বাহিনীর আক্রমণের অব্যবহিত পূর্বে এবং পাকিস্তান বাহিনী কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতারের প্রাক্কালে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। স্বাধীনতা ঘোষণায় বলা হয়েছে 'ইহাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাইতেছি যে, যে যেখানে আছ, যাহার যাহা কিছু আছে, তাই নিয়ে রুখে দাঁড়াও, সর্বশক্তি দিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করো। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।'
বিশ্বের উন্নত-অনুন্নত নির্বিশেষে বহু দেশে যানজট একটি বহুল আলোচিত সমস্যা। উন্নয়নশীল দেশের নগরসমূহে এ সমস্যা তীব্র, বিশেষ করে অর্থনীতিতে এর প্রভাব অত্যন্ত নেতিবাচক। ইউরোপে বছরে ২০০ বিলিয়ন ইউরো, যুক্তরাষ্ট্রে ১০০ বিলিয়ন ডলার নষ্ট হচ্ছে যানজটের ফলে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, যানজটের কারণে রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় ১১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের মোট জিডিপির ৭ শতাংশের সমান। বলার অপেক্ষা রাখে না, আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি সমাজ ও পরিবেশের ওপরও যানজট বিরূপ প্রভাব ফেলে।
ঢাকা বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধমান একটি নগর, যেখানে বিবিধ উন্নয়ন ও পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। রাজধানীর পাশাপাশি ঢাকা দেশের প্রশাসনিক, বাণিজ্যিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। দেশের সব প্রাপ্ত থেকে মানুষ তার বিবিধ প্রয়োজনে ছুটছে ঢাকা অভিমুখে, বাড়িয়ে তুলছে নগরীর জনসংখ্যাকে। এই অতিরিক্ত জনসংখ্যা নগরীতে নানা কৃত্রিম সমস্যার সৃষ্টি করছে, যার মধ্যে অন্যতম যানজট। ঢাকায় দৈনিক প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ যাত্রা (ট্রিপ) হয়। একজন মানুষ কোনো একটি বাহনে উঠে নির্ধারিত গন্তব্যে নামলে একটি যাত্রা বা ট্রিপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যানজটের আর্থিক ক্ষতি নিয়ে একাধিক গবেষণায় ভিন্ন ভিন্ন তথ্য উঠেএসেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০ হাজার থেকে ৫৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক ক্ষতি হচ্ছে। এ থেকে বলা যায়, গড়ে বছরে যানজটের কারণে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে ৩৭ হাজার কোটি টাকা। তবে সড়ক খাতে বিনিয়োগ, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও যানজট নিরসনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এই ক্ষতির অন্তত ৬০ শতাংশ বা ২২ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা যেত।
যানজট ৯ ধরনের মানবিক আচরণকে প্রভাবিত করছে। দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব থেকে শুরু করে সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার মতো বিষয়গুলো যানজটে প্রভাবিত হচ্ছে। যানজটে বসে থাকলে মানসিক চাপ তৈরি হয়। নানান রকম দুশ্চিন্তা ভর করে। এই মানসিক চাপ সব ধরনের রোগের উৎস। চাপের ফলে নাগরিকদের মেজাজ পিটপিটে হয়ে যায়, যুদ্ধাংদেহী মনোভাব চলে আসে। যানজটের কারণে মানসিক অশান্তি তৈরি হয়, যার প্রভাব পড়ে পরিবারসহ বিভিন্ন সামাজিক সম্পর্কে। ব্যক্তির কর্মদক্ষতা, কর্মস্পৃহা নষ্ট হয়ে যায়। যে চালকেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটানা গাড়ি চালান, তাদের দুর্ঘটনা ঘটানোর আশঙ্কা বেশি থাকে। আর উচ্চমাত্রার শব্দদূষণের ফলে দীর্ঘস্থায়ী বধিরতা তৈরি হতে পারে।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে আসার আকাঙ্ক্ষা সব দেশেরই। কেননা, এর সঙ্গে দেশের সম্মান, আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি ইত্যাদি জড়িত রয়েছে। বাংলাদেশ একটি অগ্রসরমান দেশ। মোট দেশজ উৎপাদন প্রবৃদ্ধির হার তুলনীয় অনেক দেশের চেয়ে বেশি। আর সামাজিক খাতে বাংলাদেশের সাফল্য তো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশ একটি স্বল্পোন্নত দেশ। এটি আমাদের জন্য সুখকর নয়। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ ঘটলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বাড়বে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রভাবশালী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে আমরা এক কাতারে দাঁড়াতে পারব। কিন্তু অবকাঠামোগত দুর্বলতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব এবং সুশাসনের ঘাটতির জন্য আমরা দ্রুত অগ্রসর হতে পারছি না। মনে রাখতে হবে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমরা বেশ কিছু সুবিধা থেকে বঞ্চিত হব। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ইত্যাদি উন্নত দেশে আমরা আমাদের রপ্তানি পণ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পের ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাই। উন্নয়নশীল দেশ হলে আমরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হব। তখন আমাদের প্রতিযোগী দেশ যেমন চীন ও ভিয়েতনামের মতো শর্তে পণ্য রপ্তানি করতে হবে। এ ছাড়া বাণিজ্যসংক্রান্ত মেধাস্বত্ব আইন বা ট্রিপস এবং বাণিজ্য-সংক্রান্ত বিশেষ সুবিধাগুলো আমরা আর পাব না।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে, শুধু এই সুবিধা পাওয়ার জন্যই আমরা স্বল্পোন্নত দেশে রয়ে যাব কি না। আর শুল্কমুক্ত সুবিধা সারা জীবন শুধু স্বল্পোন্নত দেশের জন্যও থাকবে না। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার দোহা রাউন্ডের চুক্তিগুলো বাস্তবায়িত হলে শুল্ক এমনিতেই সবার জন্য কমে যাবে। তখন আর আমাদের জন্য অগ্রাধিকারমূলক শুল্কসুবিধা থাকবে না। তা ছাড়া, বর্তমানে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তিগুলোতেও শুল্ক হারে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং স্বল্পোন্নত দেশ হওয়ার সুবিধা একসময় শেষ হয়ে যাবে। তাই আমাদের লক্ষ্য হবে প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত করে, মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটিয়ে এবং অর্থনৈতিক নাজুকতা কাটিয়ে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আবির্ভূত হওয়া।
ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড হলো কোনো দেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার, অর্থাৎ ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী জনসংখ্যার আধিক্য। যখন এই কর্মক্ষম জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের বেশি থাকে, তখন ওই দেশ ডেমোগ্রাফিক বোনাসকালে অবস্থান করছে বলে ধরা হয়। মনে করা হয়, এ জনসংখ্যা কোনো না কোনোভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে, যা দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখে। ইউএনডিপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে এদেশের কর্মক্ষম জনশক্তি ১০ কোটি ৫৬ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। ২০৩০ সালে দেশে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়াবে ১২ কোটি ৯৮ লাখে। আর ২০৫০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা ১৩ কোটি ৬০ লাখে উন্নীত হবে। জনসংখ্যার ডিভিডেন্ড বা বোনাসকালের সুবাদে দেশে বর্তমানে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ছয় কোটি সাত লাখ, যা মোট জনগোষ্ঠীর ৩৯ শতাংশ। এর মধ্যে কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে পাঁচ কোটি ৮১ লাখ। সে হিসাবে বেকারের সংখ্যা ২০ লাখ। আর নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে শ্রমশক্তির বাইরে রয়ে গেছে সোয়া চার কোটি মানুষ। মোট জনশক্তির বাকিটা ১০ বছরের নিচে শিশু। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। এর আগে ২০১০ সালের শ্রমশি জরিপে দেশে কর্মক্ষম মানুষ ছিল পাঁচ কোটি ৬৭ লাখ। সে হিসাবে তিন বছরে দেশে শ্রমশক্তি বেড়েছে ৪০ লাখ। আর ২০১১ সালের পঞ্চম আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যা ১৫ কোটি ৪১ লাখ ।
জনসংখ্যার এই আধিক্যের মধ্যেও বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানোর সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। কোনো একটি রাষ্ট জনসংখ্যা পরিবর্তনে সুযোগ একবারই পেয়ে থাকে। এ সময়টাকে বলা হয় জনসংখ্যার ডিভিডেন্ড বা বোনাসকাল। অর্থাৎ সময়ে দেশের জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বেশি থাকে ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যের লোক ১ থেকে ১৫ বছরের নিচে বয়সী জনসংখ্যাও কমতে থাকে। একই সঙ্গে ৬৪ বছরের ওপর জনসংখ্যা থাকে সবচেয়ে কম। বাংলাদেশেও এখন সবচেয়ে কম নির্ভরশীল জনগোষ্ঠী বসবাস করছে। সর্বাধিক কর্মক্ষম এই জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও কাজের পরিবেশ তৈরি করাটা জরুরি। গত তিন বছরে দেশে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সের যুবসমাজের হার বেড়েছে। দেশে এখন দুই কোটি ৩৪ লাখ যুবক ক নিয়োজিত। ২০১০ সালের জরিপে ছিল দুই কোটি ৯ লাখ। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে হলে সবার আগে দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। একই সঙ্গে কারিগরি ও শিক্ষাব্যবস্থার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
বিগত ২০১৯ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এর তথ্যানুযায়ী তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। গত বছর ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি করে বাংলাদেশ। যদিও ২০১৯-২০ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি আয় হয়েছে প্রায় ২৮ কোটি মার্কিন ডলার। এজন্য পোশাক শিল্প হলো বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত। তবে যে কোনো দেশের জন্য কোনো শিল্প হতে লাভজনক আয়ের একটি সময়কাল থাকে, পোশাকশিল্পের পর আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য পর্যটন খাতকে চিহ্নিত করা উচিৎ বলে মনে করি। কারণ পর্যটন এখন একটি শিল্প, যা অনেক দেশের অর্থনীতির একটি মুখ্য উপাদান। এ শিল্প বিশ্বব্যাপী একটি দ্রুত বিকাশমান খাত হিসেবে চিহ্নিত। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ছাড়াও বহুমাত্রিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পর্যটন অনেক দেশেরই শীর্ষ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্পে পরিণত হয়েছে। পর্যটন একটি ব্যতিক্রমধর্মী রপ্তানি-বাণিজ্য। অন্যান্য বাণিজ্যে বিদেশে পণ্য পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়। কিন্তু পর্যটনের ক্ষেত্রে বিদেশিদের দেশ ভ্রমণে আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের সেবা ও সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে অর্থ সমাগম করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা হয়। পর্যটনে বিদেশি পর্যটক নিজের দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণে এসে থাকা-খাওয়া, যাতায়াত বিনোদন ইত্যাদিতে যে অর্থ ব্যয় করে, তা অন্য দেশের বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে অর্জিত হয়। পর্যটনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হোটেল, মোটেল ও অন্যান্য সহসংস্থার অর্জিত অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অন্যান্য রপ্তানির তুলনায় পর্যটনশিল্প থেকে আয়ের পরিমাণ দ্রুত বর্ধনশীল ।
একটি পর্যটন অঞ্চল গঠন ও উন্নয়নের ফলে সেখানে পর্যটকের সমাগমের মাধ্যমে অর্থপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। কম শিল্পায়িত এলাকায় পর্যটনশিল্পের বিকাশের ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়, যা আশপাশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। পর্যটনকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বের বহু দেশ প্রমাণ করেছে, পর্যটন অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম মাধ্যম। সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, হংকং, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার জাতীয় আয়ের একটা বড় অংশ অর্জিত হয় এ খাত থেকে। মালদ্বীপের অর্থনীতির প্রধান অংশ পর্যটন খাতের ওপর নির্ভরশীল ।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মোট ৫টি কয়লাখনি আবিষ্কৃত হয়েছে এবং কয়লাগুলোও বেশ উন্নতমানের যাদের জ্বালানি হিসেবে দহন ক্ষমতা ৬০% - ৮০%। কিন্তু বাংলাদেশের মতো উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্বের দেশে এই কয়লা উত্তোলনে প্রয়োজন সর্বাধুনিক প্রযুক্তি যাতে পরিবেশের ক্ষতি না করে প্রয়োজন মাফিক সর্বোচ্চ পরিমাণ কয়লা উত্তোলন করা যায় ।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ই চীনের বন্ধু রাষ্ট্র। চীন উভয় রাষ্ট্রের-ই বৃহত্তম উন্নয়নে অংশীদার। চীনের উপর রেখে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীনের সহযোগিতার বিষয়ে আপনার মতামত লিখুন । বহির্বিশ্বের প্রভাব চীনা প্রভাবের তুলনায় নগণ্য। আবার, চীনের এবং দুটি দেশেই বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত চীনকে সাথে নিয়ে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি কাজে লাগিয়ে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা।
যখন কোনো দেশ তার কূটনৈতিক সক্ষমতাকে অর্থনেতিক সমৃদ্ধ অর্জনের প্রধানতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এবং কূটনীতি ও বিদেশে তার দেশের রপ্তানি বৃদ্ধি, বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও নিজ দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে তখন তাকে অর্থনৈতিক কূটনীতি বলে। ভারত বহির্বিশ্বে তার বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের সুনাম প্রচারের মাধ্যমে প্রায় ২ থেকে ৩ কোটি অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার ২-৩% লোকের বহির্বিশ্বে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। সেই সাথে অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে বাৎসরিক ২০০-৩০০ বিলিয়ন ডলারে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করছে। অপরদিকে দুর্বল অর্থনৈতিক দেশগুলোকে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সাহায্য-সহযোগিতা এবং ঋণের মাধ্যমে তাদের কূটনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করছে।
ভেনিজুয়েলা ও ইন্দোনেশিয়া OPEC এর সদস্য এবং জ্বালানী তেলের প্রাচুর্য থাকা সত্ত্বেও উন্নত দেশের কাতারে পৌঁছাতে না পারার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অরাজকতা, বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর বিদ্রোহ, সংঘর্ষ এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি।
দক্ষিণ এশিয়ার জাতি গোষ্ঠী সমূহের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি, আঞ্চলিক যোগাযোগ এবং ব্যবসা- বাণিজ্যের প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে SAARC গঠিত হয়। এর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোনো সদস্য রাষ্ট্র কোনো বিষয়ে আপত্তি জানালে তা নিয়ে আর আলোচনা করা যায় না এমনকি দ্বি-পাক্ষিক কোনো বিষয় এই ফোরামেও আলোচনা করা যায় না। দক্ষিণ এশিয়ার বিবাদমান দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র ভারত এবং পাকিস্তান কাশ্মিরকে কেন্দ্র করে শুরু থেকেই পরস্পর বিরোধী অবস্থানে থাকার করণে SAARC তার উদ্দেশ্যে পূরণে অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে। এই বিবাদমান দুই দেশের বিরোধ মিমাংসা SAARC কে একটি গতিশীল ও কার্যকর সংস্থায় পরিণত করবে।
এক দেশ দুই নীতি বা 'ওয়ান কান্ট্রি টু পলিসি'র দেশ চীন। ১৯৯৭ সালের ৩০ জুন মধ্যরাতে হংকং চীনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে চীন সরকার এই নীতি প্রণয়ন করে। চীনের শাসনাধীনে যাওয়ার পূর্বে হংকংয়ের অর্থনীতি ছিল পুঁজিবাদী ব্যবস্থা। অন্যদিকে চীনের অর্থব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল সমাজতান্ত্রিক। এ অবস্থায় চীন সরকার হংকংয়ের পূর্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার উক্ত নীতি প্রবর্তন করে। হংকং ১৯৯৭ সালের চীনের কাছে প্রত্যাপিত হয়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ নানাবিধ কার্যসম্পাদন করে থাকে। জাতিসংঘ সনদ মোতাবেক সাধারণ পরিষদ যে সমস্ত কার্যাবলি করে থাকে সেগুলো নিম্নোক্তভাগে ভাগ করা যায়ঃ
০১. নির্বাচনমূলক কাজঃ সাধারণ পরিষদের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো নির্বাচন পরিচালনা করা। নির্বাচন সংক্রান্ত এ পরিষদ নিম্নোক্ত কার্যাবলি সম্পাদন করেঃ ক. নিরাপত্তা পরিষদের ১০ জন অস্থায়ী সদস্য নির্বাচন করা। ভৌগোলিক ভিত্তিতে আফ্রো-এশিয়া এলাকা থেকে ৫ জন, পূর্ব ইউরোপ থেকে ১ জন, ল্যাটিন আমেরিকা থেকে ২ জন এবং পশ্চিম ইউরোপ ও অন্যান্য রাষ্ট্র থেকে ২ জন নির্বাচিত হয়ে থাকেন।
খ. অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের (ECOSOC) ৫৪ সদস্যের নির্বাচন করা।
গ. জাতিসংঘ সনদের ৯৭ ধারা মোতাবেক নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশক্রমে জাতিসংঘের মহাসচিব নির্বাচন করা। সাধারণ পরিষদ প্রতি ৫ বছরের জন্য মহাসচিব নির্বাচন করে থাকে।
ঘ. এ পরিষদ আন্তর্জাতিক আদালতের ১৫ জন বিচারকের নির্বাচন করে থাকে। তবে এ নির্বাচনে সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদ স্বতন্ত্রভাবে ভোট প্রদান করে থাকে।
ঙ. অছি পরিষদের সদস্য নির্বাচন পরিচালনা করে থাকে। অবশ্য বর্তমানে জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা হিসেবে আছি পরিষদকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
০২. অর্থ-সম্পর্কিত কার্যাবলি। ০৩. তত্ত্বাবধায়কের কাজ; ০৪. সুপারিশমূলক: ৩৫, সনদ সংশোধনমূলক, ০৬, সহযোগী সংস্থা গঠন, ০৭. আইনবিষয়ক কাজ, ০৮. উদ্যোগ গ্রহণ: ০৯. রিপোর্ট গ্রহণ ও পর্যালোচনা; ১০. নির্বাহী সংক্রান্ত কাজ। এছাড়া জাতিসংঘের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সাধারণ পরিষদ নতুন কোনো বিশেষ সংস্থা গঠন করতে পারে এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক শিক্ষা বিষয়ে গবেষণা চালাতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সংশ্লিষ্ট রয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৮৮ সালে সর্বপ্রথম দুটি অপারেশনে অংশগ্রহণ করে, ইরাকে এবং নামিবিয়ায়। উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় যান্ত্রিক পদাতিক বাহিনীর অংশ হিসেবে কুয়েতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কন্টিনজেন্ট পাঠানো হয়েছিল। এর পর থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও পুলিশ ইউএনপিকেওর (ইউনাইটেড ন্যাশনস পিসকিপিং অপারেশনস) অংশ হিসেবে প্রায় ২৫টি দেশে ৩০টিরও বেশি মিশনে অংশগ্রহণ করেছে। যেসব দেশের মিশনে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে নামিবিয়া, কম্বোডিয়া, সোমালিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, মোজাম্বিক, সাবেক যুগোস্লোভিয়া, লাইবেরিয়া, হাইতি, তাজিকিস্তান, পশ্চিম সাহারা, সিয়েরা লিওন, কসোভো, জর্জিয়া, পূর্ব তিমুর, কঙ্গো, আইভরিকোস্ট ও ইথিওপিয়া। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে সর্বোচ্চসংখ্যক জনবল অংশগ্রহণ করেছে। তখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ হাজার ৮৫৫ জন (সামরিক ও আইন প্রয়োগকারী) জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের আওতায় বিভিন্ন দেশে কর্মরত ছিলেন। শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকা প্রশংসনীয় ।
এবার জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের দুটি সাফল্য অর্জিত হয়েছে। একটি হচ্ছে এ মিশনে সর্বোচ্চসংখ্যক শাস্তি রক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে দীর্ঘদিন দ্বিতীয় অবস্থানে থাকার পর আবারও প্রথম অবস্থানে উঠে এসেছে। দ্বিতীয় সাফল্য হচ্ছে, বাংলাদেশের একজন সেনা কর্মকর্তা দক্ষিণ সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার নির্বাচিত হয়েছেন। আগেও বাংলাদেশের সেনা কর্মকর্তারা জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে ফোর্স কমান্ডার ও ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জীব-জগতে সালোকসংশ্লেষণের গুরুত্ব খুব বেশি। এই প্রক্রিয়া যে কেবল উদ্ভিদ-জীবনে একান্ত অপরিহার্য তাই নয়, মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রে সালোকসংশ্লেষণের অবদান অপরিসীম। নিচে এবিষয়ে আলোচনা করা হল।
সালোকসংশ্লেষণের গুরুত্বঃ সালোকসংশ্লেষণ হলো উদ্ভিদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ খাদ্য উৎপাদন করে। জীবজগতে সালোকসংশ্লেষণের গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে সংক্ষেপে এর গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করা হলোঃ
এন্টিবায়োটিক হলো এমন একটি উপাদান যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাস থেকে সংগ্রহ করে অন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ফাঙ্গাসকে ধ্বংস বা তার বংশবৃদ্ধি রোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। এন্টিবায়োটিকের দুটি অপব্যবহারঃ (ক) অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করে ফেলে এবং (খ) লিভারের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে।
কার্বন মৌল কার্বন ডাই-অক্সাইড যৌগরূপে যে চক্রাকার পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডল থেকে জীব জগতে প্রবেশ করে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে আবার বায়ুমণ্ডলে ফিরে এসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখে, তাকে কার্বন চক্র বলে। ইংরেজিতে কার্বন চক্রকে Carbon Cycle বলে ।
কার্বন জীব ও জড় পরিবেশের মধ্যে প্রতিনিয়ত আবর্তিত হয়। সব জীবদেহ গঠনে কার্বনের প্রয়োজন। এটি বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস হিসেবে অবস্থান করে। বায়ুমণ্ডলে এর পরিমাণ ০.০৩৬ ভাগ। উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় পানি ও বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইড থেকে অক্সিজেন ও গ্লুকোজ তৈরি করে। এই গ্লুকোজ উদ্ভিদের দেহ তৈরি করে। প্রাণী উদ্ভিদ থেকে খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে কার্বন গ্রহণ করে। এই কার্বন উদ্ভিদ ও প্রাণী দেহ থেকে তিন উপায়ে আবার বায়ুমণ্ডলে ফিরে আসে। প্রথমত, উদ্ভিদ ও প্রাণী শ্বসন প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ ভেঙে শক্তি উৎপাদন করার সময় বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন গ্রহণ করে। এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলে ছেড়ে দেয়। দ্বিতীয়ত, উদ্ভিদকে জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলে বা প্রাণীদেহকে। পোড়ালে তাতে কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বায়ুমণ্ডলে মেশে। উদ্ভিদ বা গাছপালা মরে গেলে এদের দেহাবশেষ ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে ভেঙে যায় এবং একপর্যায়ে জীবাশ্ম জ্বালানি হিসেবে ভূগর্ভে জমা হয়। আমাদের অতি ব্যবহৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা, কেরোসিন বা পেট্রোল এ সবই এই প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি আমরা রান্না থেকে শুরু করে গাড়িতে, শিল্প-কারখানায় দহন করে ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যবহার করছি। তৃতীয়ত, উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহ মাটিতে পড়ার সময় ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক কার্বন ডাই-অক্সাইড সরাসরি বায়ুতে ছেড়ে দেয়। এভাবে কার্বন চক্রের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলে কার্বনের অর্থাৎ কার্বন ডাই-অক্সাইডের ভারসাম্য বজায় থাকে
কম্পিউটারের নিজস্ব কোনো বুদ্ধি নেই। এটি শুধু নিজের কাছে সংরক্ষিত তথ্য এবং প্রোগ্রামের আলোকে কাজ করতে পারে। কোন সমস্যার আলোকে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে না। কম্পিউটারও যাতে কোন সমস্যা দেখা দিলে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তার জন্য এর ভিতর অনেক সমস্যা ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে। এটিকেই বলে আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সি বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
IR 4.0 বলতে Industry Revolution 4.0 কে বুঝায়। Industry 4.0 শব্দটি জার্মান থেকে উদ্ভব হয়েছে। IR 4 হল Industry Revolution এর এক নতুন অর্জন। সেটা প্রধানত ইন্টার কানেকটেভিটি (Interconnectivity) অটোমেশন, (Automation), মেশিন লার্নিং (Machine Learning) এবং রিয়াল ডাটা (Real data) এর উপর গুরুত্ব আরোপ করে। আধুনিক প্রযুক্তির পর্যায়কেই সাধারণত IR 4.0 বলে।
Elements গুলো হলোঃ Big data (বিগ ডাটা), Internet of Things (IoT), সাইবার পিসিকাল সিস্টেম (Cyber Physical Systems), ইন্টারোপেরাবিলিটি (Interoperability).
COVID এর পূর্ণরূপ : COVID 3 Corona Virus Disease. ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকার দুটি সংস্করণ জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার যে দুটি সংস্করণ WHO অনুমোদন দেয়, তার একটি উৎপাদন করে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এবং অন্যটি উৎপাদন করছে দক্ষিণ কোরিয়ার অ্যাস্ট্রাজেনেকা এসকেবায়ো। এর আগে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সালে ফাইজার এবং বায়োএনটেকের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় WHO বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
WHO এর পূর্ণরূপ হলো World Health Organization. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আর্সেনিক গ্রহণযোগ্য মাত্রা ১০ পিপিবি বা ০.০১ মিলিগ্রাম/লিটার। তবে বাংলাদেশের জন্য আর্সেনিকের গ্রহণযোগ্য মাত্রা ০.০৫ মিলিগ্রাম/লিটার।
অপটিক্যাল ফাইবার একধরনের পাতলা, স্বচ্ছ তন্তু বিশেষ যা কাঁচ বা প্লাষ্টিক দিয়ে তৈরি। এটি অধিক দূরত্বে টেলিযোগাযোগের ক্ষেত্রে আলো পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। এর তিনটি অংশ। যথা: ১. কোর ২. ক্ল্যাডিং ও ৩. জ্যাকেট। অপটিক্যাল ফাইবার-এর বহুবিধ ব্যবহারিক প্রয়োগ রয়েছে, যেমন: যোগাযোগ ব্যবস্থা, চিকিৎসা ক্ষেত্রে মেডিক্যাল ইমেজিং ব্যবস্থা এবং শিল্পকারখানা ও শল্যচিকিৎসায় পথনির্দেশক হিসেবে ব্যবহারের জন্য উচ্চ ক্ষমতার লেজার থেকে উৎসারিত আলোককে অপটিক্যাল ফাইবারের মধ্য দিয়ে পাঠানো হয়।