'বাঙালীর ইতিহাস
'বাঙালীর ইতিহাস' গ্রন্থের লেখক নীহাররঞ্জন রায়
প্রথম আলো
'প্রথম আলো' উপন্যাসের লেখক হলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
তিরস্কার
তিরস্কার = পুরস্কার।
অনাবৃষ্টি
অনাবৃষ্টি = অতিবৃষ্টি
তপোবন
তপোবন = তপঃ + বন।
সংবাদ
সংবাদ = সম্ + বাদ।
মুমুর্ষ
মুমুর্ষ = মুমূর্ষু ।
সমিচিন
সমিচিন = সমীচীন
যিনি বক্তৃতাদানে পটু
যিনি বক্তৃতাদানে পটু = বাগ্মী
উপকারীর অপকার করেন যে
উপকারীর অপকার করেন যে = কৃতঘ্ন ।
গড্ডালিকা প্রবাহ
গড্ডালিকা প্রবাহ (অন্ধ অনুকরণ): গড্ডালিকা প্রবাহে যারা গা ভাসিয়ে দেয়, তাদের দলে নেই।
ভঁইফোড়
ভুঁইফোঁড় (অর্বাচীন/নতুন): ভুঁইফোঁড়দের আগমনে পুরাতনদের কদর কমে যায়।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ কারণে নানা জটিল ও অপরিচিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। উন্নত দেশের শহরগুলোয় সাধারণত মানুষের ঘুম ভাঙার আগেই নগরীর ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তার উল্টো। নগরীর বড় বড় রাস্তার পাশে দিনের পর দিন ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে। আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলারও কোনো সুব্যবস্থা নেই। সড়কের এক পাশেই খোলা আকাশের নিচে ময়লা স্তূপাকারে রেখে দেয়া হয়। ফলে আশপাশে বাস করা জনগোষ্ঠীর জন্য এলাকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাছাড়া নগরীর সর্বত্র জমে থাকা বর্জ্য নগরীর পরিবেশ আরো দুর্গন্ধময় করে তুলছে। যদিও মহানগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সার্বিক দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। অন্যান্য কাজের চেয়ে এতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া অত্যাবশ্যক। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, সিটি করপোরেশন এ দিকটির প্রতি কমই নজর দিচ্ছে। তাছাড়া এ বিষয়ে নগরবাসীও তেমন সচেতন নয়। সর্বমহলের সচেতনতা ছাড়া বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আসবে না। জার্মানিতে বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থাপনা কাজ করছে দুর্দান্ত সফলভাবে। শুধু জার্মানি একা নয়, এ কাজে সাফল্য পেয়েছে আরো কয়েকটি পশ্চিম ইউরোপীয় দেশ- বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া, সুইডেন ও নেদারল্যান্ডস। জার্মানি গোটা দেশের অতিসক্রিয় পৌরসভা ব্যবস্থার সাহায্যে দৈনন্দিনের বর্জ্য পদার্থ, যথা কাগজ থেকে প্লাস্টিক বা জৈব অজৈব বর্জ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করে। তার ৪৫ শতাংশ পুনর্ব্যবহারের কাজে লাগায়। বাকি বর্জ্যের ৩৮ শতাংশ পুড়িয়ে ফেলা হয় আর পড়ে থাকা ১৭ শতাংশের মতো বর্জ্য কাজে লাগানো হয় সার তৈরি করতে। মাত্র ৩ শতাংশ বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলে জার্মানি। অন্যদিকে বাসযোগ্য দেশগুলোর তালিকায় ওপরের সারিতে থাকা জাপানে বর্জ্য ফেলা হয় নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে। একেক ধরনের বর্জ্য ফেলার জন্য একেক ধরনের পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। সবাই এ নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য। রোজকার রান্নাঘরের দাহ্য আবর্জনা ফেলা হয় পলিথিনের ব্যাগে। এ ব্যাগের লেখাগুলো লাল। পানীয় পেট বোতল ফেলা হয় নীল রঙের ছবি ছাপা ব্যাগে কিন্তু এ পেট বোতলগুলোকে চ্যাপ্টা করে ঢোকানো হয়, যাতে জায়গা কম লাগে । এ আবর্জনার মধ্যে রান্নাঘরের বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। ব্যবহৃত পেট বোতল থেকে তৈরি করা হয় নতুন পেট বোতল। আর ব্যবহৃত প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে নতুন প্লাস্টিক তৈরি করা হয়। টিনের ক্যানগুলো রাখা হয় সবুজ লেখা ছাপা ব্যাগে। আইন না মানলে জরিমানা করা হয় মোটা অংকের অর্থ। বাংলাদেশেও সফল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদাহরণ রয়েছে। যশোরে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে জৈব সার, বিদ্যুৎ ও বায়োগ্যাস। দেশের প্রথম আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে সেখানে। প্রতিটি নাগরিককে এ কাজের সঙ্গে যুক্ত করে পুরো পৌর এলাকা ময়লামুক্ত করা হয়। পরিবেশবান্ধব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট বা ময়লা প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন হবে জৈব সার, বায়োগ্যাস ও বিদ্যুৎ। বর্জ্য থেকে শহরে যাতে দুর্গন্ধ না ছড়ায় এজন্য ময়লা-আবর্জনা ফেলতে চালু করা হচ্ছে ঢাকনাযুক্ত কনটেইনার ডাস্টবিন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বেশি প্রয়োজন জনসচেতনতা, জনগণের অংশগ্রহণ। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এ বর্জ্যকে বদলে দিতে পারে সম্পদে। বাংলাদেশে বর্জ্যদূষণের অন্যতম কারণ এর ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি। উন্নত দেশগুলো যে ত্রুটিহীনভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করছে তা নয়। তবে শিল্পোন্নত দেশগুলো বর্জ্যকে পুনরায় ব্যবহার করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে । বাংলাদেশের বর্জ্য খাল-বিল-নদ-নদী এমনকি খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়। অপরিকল্পিতভাবে ল্যান্ডফিল সাইটে বর্জ্য স্তূপীকরণের কারণে সৃষ্টি হয় নানা রকম সমস্যা। বর্জ্য অব্যবস্থাপনার ফলে বায়ুদূষণ ও পানিদূষণ ব্যাপকতা লাভ করছে। এছাড়া বিভিন্ন উৎস থেকে আসা বর্জ্য পদার্থ কোনো রকম বাছাই ছাড়াই একসঙ্গে ডাম্প করা হচ্ছে। নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থেকে এখনো আলাদা করা হয়নি মেডিকেল বর্জ্যকে। এসব বর্জ্য যথাযথভাবে প্রক্রিয়াজাত না করায় বিভিন্ন রোগব্যাধি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এ সমস্যার সবচেয়ে সহজ সমাধান হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন রঙের কনটেইনারে ভিন্ন ধরনের বর্জ্যা ফেলা ৷ ঢাকা মহানগরীতে প্রায় তিন বছর আগে ঘরে ঘরে লাল, সবুজ ও হলুদ কনটেইনার বিনামূল্যে সরবরাহ করেছে সিটি। করপোরেশন। কিন্তু এসবের ব্যবহার হচ্ছে না। উন্মুক্ত স্থানে ময়লা যাতে পড়ে না থাকে, সে কারণে বিপুল অর্থ ব্যয়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘটা করে স্টেশন তৈরি করা হলো। সেটিও সঠিকভাবে কাজ করছে না। এসব ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। অথচ জাপানে প্রতি ১ লাখ লোকের পৌর বর্জ্য থেকে চার লাখ রোল টয়লেট পেপার তৈরি হচ্ছে। বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎত্ত উৎপাদন করা হচ্ছে। আমাদের শহরেও উৎপাদিত বর্জ্যের স্বাস্থ্যসম্মত অপসারণের পাশাপাশি এগুলোর লাগসই পুনরাবর্তন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নতুন পণ্য উৎপাদন এবং কর্মক্ষেত্র তৈরির মাধ্যমে অর্থনীতির গতি বাড়ানো সম্ভব। এজন্য পরিবেশ দপ্তর, সিটি করপোরেশন, প্রশাসন ও সরকারকে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি উপযুক্ত আইন করে তার কঠোর প্রয়োগে উদ্যোগী হতে হবে।