অন্ধকার দেখা
অন্ধকার দেখা (বিপদে দিশেহারা হওয়া): করোনায় রহিম সাহেবের চাকরি চলে যাওয়ায় এখন তিনি অন্ধকার দেখেন।
এক ঝাড়ের বাঁশ
এক ঝাড়ের বাঁশ (একই দলের লোক): ওরা একই ঝাড়ের বাঁশ, তাই চলাচলনও একই রকমের।
গলা কাটা
গলা কাটা (অত্যন্ত চড়া): বাজারের জিনিসপত্রের দাম এখন গলাকাটা ।
কাঞ্চন মূল্য
কাঞ্চন মূল্য (অতি উচ্চ মূল্য): স্বর্ণ এখন কাঞ্চন মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
ঠান্ডা লড়াই
ঠান্ডা লড়াই (গোপনে বিরোধিতা): তাদের মধ্যে এমন ঠান্ডা লড়াই চলছে যে তা বাইরে থেকে বোঝা যায় না।
ক্ষমা করা ইচ্ছা
ক্ষমা করার ইচ্ছা = তিতিক্ষা ।
একই গুরুর শিষ্য
একই গুরুর শিষ্য = সতীর্থ ।
দূরকে যিনি দেখতে পান
দূরকে যিনি দেখতে পান = দূরদর্শী।
মাসের শেষ দিন
মাসের শেষ দিন = সংক্রান্তি ।
বিচার না করে কাজ করেন যিনি
বিচার না করে কাজ করেন যিনি = অবিবেচক।
বিশ্বসভায় সৌরভে, গৌরবে ধ্বনিত হচ্ছে যৌবনদীপ্ত বাংলাদেশের সুবর্ণ পঞ্চাশ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের । সৌধ ছুঁয়ে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়েছিল যে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ, পঞ্চাশ বছরের বীরোচিত পদভারে ২০২১ সালে সে দেশ বিশ্বের বিস্ময়। অর্জন ও সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্তের নাম সবুজে-শ্যামলে বর্ণিল বাংলাদেশ। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ এখন ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী'র মাহেন্দ্রক্ষণে। ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জনের ৫০ বছরপূর্তি পালনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করেছে একটি বার্ষিক পরিকল্পনা। সরকার ২৬ মার্চ ২০২১ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের ঘোষণা দিয়েছে। ইতিহাসের প্রদীপ্ত ধারাবাহিকতায় একই সঙ্গে চলছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মুজিব বর্ষ'। স্মৃতি, সত্তা, ভবিষ্যতের আবহমান বাংলাদেশ আর বাঙালি জাতি উদ্বেলিত চিত্তে ধ্বনিত করছে স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণ বার্তা। পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের সাফল্যজনক অর্জন শুধু দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলেই নয়, সারা বিশ্বের জন্যই ঈর্ষণীয় দৃষ্টান্ত। জনপদের প্রতিটি ক্ষেত্রে আর মানুষের জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে স্বাধীনতা ও বিজয়ের আলোকশিখা | দেদীপ্যমান হয়েছে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার বাস্তব ও ইতিবাচক অভিঘাতে । দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার প্রসার, নারী উন্নয়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। খোদ জাতিসংঘ বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ | হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে গৌরবান্বিত করেছে। বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ, মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরসহ সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌছে গেছে। ধান, ফল, মাছ উৎপাদনে বিস্ময়কর বিকাশ হয়েছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে, প্রসূতি ও মাতৃমৃত্যু রোধে, ডায়রিয়া প্রতিরোধে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচিতে এবং বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রচণ্ড আঘাতের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহসিক ও অকুতোভয় বাংলাদেশ | বিশ্বের সামনে রচনা করেছে ‘সাকসেস স্টোরি’। বিশ্বের স্পটলাইটে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ' এর স্বপ্ন বাস্তবে উদ্ভাসিত । প্রযুক্তি, কলাকৌশল থেকে কৃষি খাত পর্যন্ত লিপিবদ্ধ অভূতপূর্ব সাফল্যের আখ্যান বাংলাদেশের স্বর্ণালী অর্জন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের নিবিড় সমন্বিত ব্যবস্থাপনায়, ক্ষুদ্রঋণের ব্যবহারে, দারিদ্র বিমোচনে, বনায়ন ও বৃক্ষরোপণে, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে ইতিবাচক পরিবর্তনে, সার্বিক জীবনমানের উন্নতিতে বাংলাদেশে এগিয়ে চলেছে দুর্নিবার গতিতে। বাংলাদেশ সুবর্ণ পঞ্চাশে সারা বিশ্ব অনুভব করেছে সাফল্যের বজ্রনির্ঘোষ। ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ, যে অর্থনৈতিক বিকাশের ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের মোট ১৯৬টি দেশের মধ্যে। ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। যে বাংলাদেশ একসময় ছিল শোষিত, বঞ্চিত, অবহেলিত, দারিদ্র্যপীড়িত, সে ইমেজ ইতিহাসের অতল গর্ভে বিলীন। যে বাংলাদেশকে নিয়ে পশ্চিমা-বিশ্ব উপহাস করত 'তলাবিহীন ঝুড়ি' বলে, বাংলাদেশ স্বনির্ভর ও আত্মমর্যাদায় ভাস্বর। বঙ্গবন্ধুর অনিঃশেষ অনুপ্রেরণায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সুদক্ষ, সৃজনশীল ও সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশ সুবর্ণ পঞ্চাশে বিশ্বের বিস্ময়, উন্নয়নের রোলমডেল। বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের অসহযোগিতাকে পদদলিত করে স্বঅর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে । মহাশূন্যে উপগ্রহ পাঠায় । দক্ষিণ এশিয়ায় মানব উন্নয় সূচকে, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বাংলাদেশে এগিয়ে চলে সবার আগে। উত্তেজনা ও সংঘাতের বাতাবরণে বাংলাদেশ শান্তির বার্তাবহ। শরণার্থী ও বিপন্নদের কাছে বাংলাদেশ শাশ্বত মানবিক মুখ। যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সুবর্ণ পঞ্চাশে সেই অম্লান স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে ও কঠোর পরিশ্রমে। অফুরন্ত সম্ভাবনার বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও বিজয়ের অনির্বাণ চৈতন্যে রাশি রাশি স্বর্ণালী অর্জনের মাধ্যমে রচনা করেছে এমন এক নিজস্ব পথ, যা বিশ্বের সামনে হয়েছে অনুপ্রেরণার উৎস আর বাংলাদেশ ও বাঙালিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে মর্যাদার হিমালয়-প্রতীম উচ্চতায়।