সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের আধুনিক জীবনে এক নতুন বাস্তবতা। গ্রামের চায়ের দোকানে জন্য এখন আর পত্রিকার পাতা ঘাঁটাঘাঁটি করে না। তার পরিবর্তে এসেছে স্মার্টফোন নির্ভরতা।
গণমাধ্যমে তথ্যের বিপণনের সাবেকি প্রথা এখন আর নেই। চারপাশে, দেশে-বিদেশে কী ঘটছে, সেগুলো ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, গুগলসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করে। আমাদের টাইমলাইন, নিউজফিড ভরে যায় প্রয়োজনীয় ঘটনাকে। এ সুযোগটি করে দিচ্ছে ইন্টারনেট। সারা বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৭০ শতাংশ মানুষ সামাজিক যোগাে তরুণদের মধ্যে এ হার আরও বেশি, প্রায় ৯০ শতাংশ। বাংলাদেশে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষের রয়েছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট।
ইন্টারনেট মাধ্যমের সুযোগে সামাজিক যোগাযোগের মাত্রা অতীতের তুলনায় অনেকগুণ বেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলো মানবীয় যোগাযোগের সর্বাধুনিক পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মানুষ মানবীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক দূরত্বকে পুরোপুরি দূর করে দিচ্ছে ।
মানুষের রয়েছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট । সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও আইফোন। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তি অন্য, মতামত, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি আদান-প্রদান করতে পারে। এগুলো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রাণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনলাইন সামাজিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের থাকে অনেক উৎস ও অনেক প্রাপক। প্রথাগত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের থাকে একটি উৎস ও অনেক প্রাপক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া থেকে আলাদা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে রয়েছেঃ facebook, messanger. google, instagram linkedin, pinterest, tumbler, snapchat, twitter, viber, Wechat, whatsApp, youtube ইত্যাদি।
ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রভাবঃ ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বর্তমানে মানুষের জীবনে ব্যাপক প্রভাব রেখে চলেছে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে নিচ্ছে ফেসবুক। ফেসবুক জাদুতে দূর হয়েছে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। ফেসবুকের মাধ্যমে এর সদস্যরা নির্দিষ্ট কাউকে বন্ধু হিসেবে বেছে নিতে পারেন। আবার কারও বন্ধুত্বের আহ্বান ফিরিয়েও দিতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে এক ধরনের আসক্তি তৈরি করে। অধিক সময় ব্যয় হয়, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এসব কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের বিকারগ্রস্থ করে তোলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মানসিক চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে অনেক ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। একজন ইংরেজ মনোচিকিৎসক বলেছেন, তিনি বছরে প্রায় ১০০ জনকে মনেচিকিৎসা দিচ্ছেন যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে মনোবিকারগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।