খয়ের খাঁ
খয়ের খাঁ (চাটুকার): তুমি তো বড় সাহেবের খয়ের খাঁ, তিনি যা বলেন তুমি তাই করো ।
উড়ো চিঠি
উড়ো চিঠি (বেনামি চিঠি/ নামহীন চিঠি): ভয় দেখাবার জন্যে একটা উড়ো চিঠি লেখা হয়েছে ।
ডান হাতের ব্যাপার
ডান হাতের ব্যাপার (খাওয়া): আগে ডান হাতের ব্যাপারটা সেরে নিতে দাও ।
তাসের ঘর
তাসের ঘর (ক্ষণস্থায়ী): একমাত্র ছেলে পরীক্ষায় ফেল করায় মায়ের স্বপ্ন তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে গেল ।
পটল তোলা
পটল তোলা (মারা যাওয়া): বুড়ো আজ বাদে কাল পটল তুলবে অথচ রাগ কমে না ।
অস্তি
অস্তি = নাস্তি ।
ওস্তাদ
ওস্তাদ = শাগরেদ ।
টাটকা
টাটকা = বাসি ।
সঞ্চয়
সঞ্চয় = অপচয় ।
সুশীল
সুশীল = দুঃশীল ।
সরোবরে জন্মে যা
সরোবরে জন্মে যা = সরোজ।
অনেকের মধ্যে একজন
অনেকের মধ্যে একজন = অন্যতম ।
যিনি প্রথম পথ দেখান
যান প্রথম পথ দেখান = পথপ্রদর্শক
যার অন্য কোন উপায় নেই
যার অন্য কোন উপায় নেই = অনন্যোপায়।
প্রায় মৃত
প্রায় মৃত = মুমূর্ষু ।
যতকাল রবে পদ্মা-মেঘনা-গৌরী-যমুনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।” ধানমন্ডি এই নাম্বার। মেইন রোড থেকে কিছুদূর গিয়ে ডান দিকে একটা ব্রীজ। ব্রীজ পেরোলেই সাইন বোর্ড ঘোষণা করছে সামনেই বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর। গেট এ চেক আপের কড়াকড়ি একটা প্রশ্নই বারবার মনে করিয়ে দেয়- সেদিন তোমরা কোথায় ছিলে? আজকের সতর্কতাটা যদি ৪৭ বছর আগে দেখাতে তাহলে হয়ত বঙ্গবন্ধু আজ জীবিত থাকতেন। যাই হোক, মোবাইল জমা দিয়ে কার্ড নিয়ে আমরা ঢুকে গেলাম জাদুঘরের ভিতর। দুটো অংশ সেখানে। একটা বঙ্গবন্ধুর বাড়ি, একটা সম্প্রসারিত জাদুঘর। বাড়িটাতে ঢোকার সময় প্রথমেই যে ঘরটা চোখে পরে তা হল রান্নাঘর। রান্নার হাড়ি-পাতিল-ডেকচিগুলো এমনভাবে রাখা যে হঠাৎ এক মূহুর্তের জন্য ভুলেই গিয়েছিলাম এখানে আর কেউ কখনো রান্না করতে আসবে না। তিনতলা বাড়িটার একতলায় ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ এ নিহত সবার ছবি আর কিছু আসবাবপত্র। দোতলায় ওঠার সিঁড়ি বাইতে, হেঁটে হেঁটে একের পর এক ঘরগুলো দেখতে দেখতে একটা কথাই বারবার মনে হচ্ছিল- এই বাড়িতে একদিন বঙ্গবন্ধু থাকতেন। এই পথ ধরে তিনি হাঁটতেন। এই ডাইনিং টেবিলে খেতেন। বঙ্গবন্ধুর বেডরুম আজো গুলির চিহ্ন ধারণ করে আছে। গুলি লেগে আছে শেখ জামাল আর তার নববধূর ঘরটিতেও ।
তৃতীয় তলাটা মূলত ছাদ। এক পাশে পড়ার ঘর। নিরিবিলি এই ঘরটা বরাদ্দ থাকত পরিবারের কোন সদস্যের পরীক্ষা থাকলে তার জন্য। আর একপাশে শেখ কামাল আর সুলতানা কামাল এর ঘর। পনেরই আগস্টের হত্যাযজ্ঞ, লুটপাট সবকিছুর পর ও আগের মত করে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে ঘরগুলোকে। শেখ কামালের ঘরে পিয়ানো, সেতার সব জায়গা মত আছে। শুধু সেগুলো বাজানোর জন্য শেখ কামাল বেঁচে নেই। ফুলদানিতে ১৪ আগস্ট, ১৯৭৫ এ সাজিয়ে রাখা ফুল। শুকিয়ে গেছে অনেক আগেই। তবু স্মৃতি ধারন করে রেখেছে। হয়ত সুলতানা কামালের এতটুকু স্পর্শের স্মৃতি। সেই সিঁড়িতে আজো বুলেটের দাগ। জাতির পিতার রক্তের দাগ।
পাশেই সম্প্রসারিত জাদুঘর। চার তলা বিশিষ্ট জাদুঘরটিতে প্রতি পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে এই দেশটার জন্য বঙ্গবন্ধু আর তার পরিবারের আত্মত্যাগের কাহিনি। মহাত্মা গান্ধী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী দের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণ মুজিব এর ছবি। ভাষা আন্দোলনের ছবি। কেন যেন বায়ান্নতে ছাত্রদের আন্দোলনে রাস্তায় শুয়ে পরার ছবি দেখে শাহবাগের ছবিগুলো মনে ভাসছিল। আহত সহযোদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন শেখ মুজিব ভাষণ দিচ্ছেন নৌকায় চড়ছেন। কত টুকরা টুকরা স্মৃতি। একসাথে করলে কি হয়? হয় একটি জাতির জন্মের ইতিহাস। শেখ কামাল- শেখ জামালের একাত্তরের রনাঙ্গনের পোশাক, ছোট্ট রাসেলের খেলার বল এমনকি খোপের পায়রাগুলো পর্যন্ত এক মহাত্মার কথা প্রতি মূহর্তে স্মরন করিয়ে দেয়।
চার তলাব্যাপী ইতিহাসের প্রদর্শনী দেখা শেষে আবার ঘরে ফেরা। শুধু কানে বাজছিল বঙ্গবন্ধুর সেই অমর উক্তি- “ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় বলে যাব আমি বাঙালি। বাংলা আমার দেশ। বাংলা আমার ভাষা। বাংলার মাটি আমার স্থান।