অর্থগতভাবে বাংলা ভাষার শব্দসমূহকে কয়ভাগে ভাগ করা যায়? উদাহরণসহ আলোচনা করুন ।
অর্থগতভাবে বাংলা ভাষার শব্দসমূহকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
১. যৌগিক শব্দ
২. রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ এবং
৩. যোগরূঢ় শব্দ
যৌগিক শব্দ: যেসব শব্দ প্রকৃতি ও প্রত্যয়যোগে গঠিত হয়ে অভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে, তাদের যৌগিক শব্দ বলে।
উদাহরণ: (i) গৈ + অক = গায়ক (গান করে যে)।
(ii) মিথ্যা + উক = মিথ্যুক (মিথ্যা কথা বলে যে)।
(iii) বাবু+আনা = (বাবুর ভাব)।
(iv) কৃ+তব্য= কর্তব্য (যা করা উচিৎ)।
(v) দুহিতা + ষ্ণ = দৌহিত্র ।
রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ: যে সকল শব্দ প্রত্যয় বা উপসর্গযোগে মূল শব্দের অর্থের অনুগামী হয়ে অন্য কোনো বিশিষ্ট অর্থ জ্ঞাপন করে, তাকে রুঢ় বা রূঢ়ি শব্দ বলে।
উদাহরণ: (i) হস্ত + ইন = হস্তী (হস্ত আছে যার); কিন্তু 'হস্তী' বলতে একটি পশুকে বোঝায়।
(ii) গো + এমনা = গবেষনা (অর্থ গরু খোঁজা)। কিন্তু বর্তমান অর্থে ব্যপক অর্থায়ন ও পর্যালোচনা এরূপ বাঁশি, তৈল, প্রধান ইত্যাদি।
যোগরূঢ় শব্দ: সমাস নিষ্পন্ন যে সকল শব্দ পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অর্থের অনুগামী না হয়ে কোনো নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে, সেগুলোকে যোগরূঢ় শব্দ বলে।
উদাহরণ: (i)পঙ্কজ= পক্ষে জন্মে যা পঙ্কজ। অথচ পঙ্কে অনেক কিছুই জন্মে। কিন্তু পঙ্কজ বলতে পদ্মফুলকেই বোঝানো হয়।
(ii) রাজপুত = রাজার পুত্র কিন্তু যোগরূপ হিসেবে জাতি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এরূপ মহাযাত্রা, জলধি ইত্যাদি।
কথপোকথোন
কথপোকথোন = কথোপকথন
জ্বাজ্জল্যমাণ
জ্বাজ্জল্যমাণ = জাজ্বল্যমান
রেজিষ্ট্রেশন
রেজিষ্ট্রেশন = রেজিস্ট্রেশন
গর্ধব
গর্ধব= গর্দভ
নিশিথিনি
নিশিথিনি = নিশীথিনী
কোন কোন বৈশিষ্ট্যের উপর বাক্যের সার্থকতা নির্ভর করে তা ব্যাখ্যা করুন।
যে সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা কোনো বিষয়ে বক্তার মনোভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় তাকে বাক্য বলে। একটি সার্থক বাক্যের গুণাবলি বা বৈশিষ্ট্য: ভাষার বিচারে একটি সার্থক বাক্যের তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক। যথা: আকাঙ্ক্ষা, আসত্তি এবং যোগ্যতা।
আকাঙ্ক্ষা: বাক্যের অর্থ পরিষ্কারভাবে বোঝার জন্য এক পদের পর অন্য পদ শোনার যে ইচ্ছা, তা-ই আকাঙ্ক্ষা। যেমন: চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে' বললে বাক্যটি সম্পূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করে না, আরও কিছু শোনার ইচ্ছা হয়। বাক্যটি এভাবে পূর্ণাঙ্গ করা যায়- চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরে'। এখানে আকাঙ্ক্ষার নিবৃত্তি হয়েছে বলে এটি পূর্ণাঙ্গ বাক্য।
আসত্তি: বাক্যের অর্থসংগতি রক্ষার জন্য সুশৃঙ্খল পদ বিন্যাসই আসত্তি। মনোভাব প্রকাশের জন্য বাক্যে শব্দগুলো এমনভাবে পরপর সাজাতে হবে যাতে মনোভাব প্রকাশ বাধাগ্রস্ত না হয়। যেমন: কাল বিতরণী হবে উৎসব কলেজে আমাদের পুরস্কার অনুষ্ঠিত। এখানে পদগুলোর সঠিকভাবে সন্নিবেশ না হওয়ায় বাক্যের অন্তর্নিহিত ভাবটি যথাযথভাবে প্রকাশিত হয়নি। তাই এটিকে বাক্য বলা যায় না। এ ক্ষেত্রে পদগুলোকে নিচের যথাস্থানে সন্নিবিষ্ট করতে হবে। কাল আমাদের কলেজে পুরস্কার বিতরণী উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি আসত্তি সম্পন্ন বাক্য।
যোগ্যতা: বাক্যস্থিত পদগুলোর অন্তর্গত এবং ভাবগত মিলনবন্ধনের নামই যোগ্যতা। যেমন: বর্ষার বৃষ্টিতে প্লাবনের সৃষ্টি হয়। এটি একটি যোগ্যতাসম্পন্ন বাক্য। কারণ, বাক্যটিতে পদগুলোর অর্থগত এবং ভাবগত সমন্বয় রয়েছে। কিন্তু বর্ষার রৌদ্র প্লাবনের সৃষ্টি করে বললে বাক্যটি ভাব প্রকাশের যোগ্যতা হারাবে, কারণ রৌদ্র প্লাবন সৃষ্টি করে না।
উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে আমরা বলতে পারি যে এই তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্যের উপর বাক্যের সার্থকতা নির্ভর করে।
কেউকেটা
কেউকেটা (নগণ্য ব্যক্তি): করিম সাহেবের মত কেউকেটা লোকের পক্ষে এ কাজ সম্ভব না।
গো-মূর্খ
গো-মূর্খ (নিরেট মূর্খ বা বর্ণজ্ঞানহীন); হারিম সাহেবের গো-মূর্খ ছেলেটার এমন রূপসী গুণবতী বৌ জুটলো, একেই বলে ভাগ্য।
গড্ডলিকা প্রবাহ
গড্ডলিকা প্রবাহ (অন্ধ অনুকরণ): গড্ডলিকা প্রবাহে ভেসে চললে জীবনে উন্নতির কোন আশা নেই।
জলে কুমির ডাঙায় বাঘ
জলে কুমীর ডাঙ্গায় বাঘ (উভয়সঙ্কট): আবুল হোসেন বড় বেকায়দায় পড়েছিল, একদিকে মাতৃআজ্ঞা লঙ্ঘনের ফলে উদ্ভূত পাপ অন্যদিকে মাতৃআজ্ঞা অমান্য করার জন্য পিতাদেশ, কোন দিকে যাবে এ যেন তার জলে কুমীর ডাঙ্গায় বাঘ।
সাক্ষী গোপাল
সাক্ষী গোপাল (ব্যক্তিত্বহীন নিষ্ক্রিয় দর্শক): যারা সাক্ষী গোপাল তাদের দিয়ে কোন কাজ হয় না।
ঘরের শত্রু বিভীষণ
ঘরের শত্রু বিভীষণ (যে স্বজন শত্রু): ঘরের শত্রু বিভীষণ করছে ক্ষতি ভীষণ।
শব্দগঠন কী? বাংলা ভাষায় শব্দগঠনের পাঁচটি প্রক্রিয়া উদাহরণসহ লিখুন।
শব্দ গঠন: পৃথিবীর অন্যান্য ভাষার মতো বাংলা ভাষায়ও কতকগুলো সুনির্দিষ্ট নিয়মের মাধ্যমে নতুন নতুন শব্দ তৈরি হয়। এই শব্দ তৈরির প্রক্রিয়াও যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়। বৈচিত্র্যময় শব্দ তৈরির এই প্রক্রিয়াসমূকেই সাধারণভাবে শব্দ গঠন বলা যেতে পারে। নিচে বাংলা ভাষায় শব্দগঠনের উল্লেখযোগ্য ৫টি প্রক্রিয়া উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো-
১. সমাসের সাহায্যে শব্দ গঠন: এই প্রক্রিয়ায় দুই বা ততোধিক পদ একপদে পরিণত হয়ে নতুন নতুন শব্দ তৈরি করে। যেমন: মহৎ যে জন = মহাজন, জায়া ও পতি = দম্পতি ইত্যাদি।
২. উপসর্গযোগে শব্দ গঠন: এ ক্ষেত্রে ধাতু বা শব্দের পূর্বে উপসর্গ যুক্ত হয়ে নতুন নতুন শব্দ তৈরি করে। যেমন: প্র+হার=প্রহার, পরা+জয়-পরাজয় ইত্যাদি।
৩. সন্ধির সাহায্যে শব্দ গঠন: পাশাপাশি দুটি বর্ণের একত্রীকরণের ফলে এই প্রক্রিয়ায় নতুন নতুন শব্দ তৈরি হয়। যেমন: বিদ্যা + আলয় = বিদ্যালয়, পর + উপকার = পরোপকার ইত্যাদি।
৪. প্রত্যয় যোগে শব্দ গঠন: ধাতু বা শব্দের শেষে প্রত্যয় যুক্ত করেও নতুন নতুন শব্দ গঠন করা যায়। যেমন:
ক) কৃৎ প্রত্যয় যোগে: পড় + আ=পড়া, পঠ + অক পাঠক ইত্যাদি।
খ) তদ্ধিত প্রত্যয়যোগেঃ কলম দানি= কলমদানি, নাম + তা = নামতা ইত্যাদি।
৫. বিভক্তির সাহায্যে শব্দ গঠন: শব্দের শেষে বিভক্তি যোগ করেও নতুন শব্দ গঠন করা যায়। যেমন: কর + এ= করে, রহিম + এর = রহিমের ইত্যাদি।
জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো।
এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির কাবা নাই।
মূলভাব: সকল উপাসনালয় থেকে শ্রেষ্ঠ মানুষের হৃদয় বা মন। কেননা পবিত্র হৃদয়েই অবস্থান করেন স্রষ্টা মানব জীবনের হৃদয়ের থেকে বড় মন আর কোথাও নেই। তাইতো কবি বলেছেন এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।
সম্প্রসারিত ভাব: মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব –আশরাফুল মাখলুকাত। কারণ মানুষকে সর্বশক্তিমান আল্লাহ বিবেক বিবেচনা ও বুদ্ধি সহকারে অপর সব জীব অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ করে সৃষ্টি করেছেন। তাই মানুষ অন্য প্রাণী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আর সেজন্য মানুষকে ন্যায়- অন্যায়, পাপ – পুণ্য বিচার করে জীবন পরিচালনা করতে হয়। সকল পাপ-পুণ্য, ভালো-মন্দ ধর্ম – অধর্মের পার্থক্য নির্ধারণে মানুষ কে পরিচালিত করে তার মন। এই মন বা হৃদয় দ্বারা পরিচালিত হয়ে মানুষ সৎ কাজ করে এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে। মানুষ নিজেকে সততা, সত্যবাদিতা, ন্যায়নিষ্ঠা, দয়া প্রভৃতি সৎ গুণাবলীর মাধ্যমেই কল্যাণের পথে বা মঙ্গলের পথে পরিচালিত হয়। অপরের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করার যে প্রবণতা মানুষের মধ্যে জাগ্রত হয় তার উৎস স্থল হচ্ছে মন বা হৃদয়।
মানুষের যদি মন বা হৃদয় নাই থাকতো তাহলে মানুষ আর মানুষ থাকত না। স্রষ্টার আরাধনা করার পবিত্র ও উৎকৃষ্ট স্থান মসজিদে, মন্দিরে দিনরাত অবস্থান করে প্রার্থনা করার তাৎপর্য এইযে, সুন্দর মোহমুক্ত পবিত্র পরিবেশে হৃদয়কে ষড়রিপুর প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা এবং আল্লাহর নির্ধারিত পথে চলে তার গুণ-কীর্তন করা।
সুতরাং, এই হৃদয়ই সমস্ত উপাসনালয়ের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান। হৃদয় কলুষিত করে দিন রাত- ভর উপাসনা করলেও কোনো ফল হবে না। কাজেই সব উপাসনালয় থেকেই শ্রেষ্ঠ হলো মানুষের হৃদয়। মানুষের নির্মল হৃদয়ই শ্রেষ্ঠ ইবাদত খানা। হৃদয় মানুষকে ন্যায়ের পথে, সত্যের পথে, ধর্মের পথে পরিচালিত করে। মসজিদ- মন্দিরের উপাসনাকে সার্থক করে তোলে।
মন্তব্য: বহু অর্থব্যয়ে সুশোভিত অট্টালিকায় নির্মিত মন্দির বা মসজিদ অপেক্ষা নিষ্কলুষ হৃদয়ের স্থান অনেক ঊর্ধ্বে। মানুষের হৃদয় বা মন অপেক্ষা বড় কোন মন্দির কাবা নাই। মানুষের মনই হচ্ছে এক একটা মসজিদ।
চর্যাপদ কবে, কোথায় এবং কে আবিষ্কার করেন।
বাংলায় মুসলমান আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবার আগে ব্রাহ্মণ হিন্দুসমাজের পীড়নের আশঙ্কায় বাংলার বৌদ্ধগণ তাঁদের ধর্মীয় পুঁথিপত্র নিয়ে শিষ্যদের সঙ্গী করে নেপাল, ভুটান ও তিব্বতে পলায়ন করেছিলেন- এই ধারণার বশবর্তী হয়ে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী তিনবার নেপাল পরিভ্রমণ করেন। ১৮৯৭ সালে বৌদ্ধ লোকাচার সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনি প্রথমবার নেপাল ভ্রমণ করেন। ১৮৯৮ সালের তার দ্বিতীয়বার নেপাল ভ্রমণের সময় তিনি কিছু বৌদ্ধ ধর্মীয় পুঁথিপত্র সংগ্রহ করেন। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয়বার নেপাল ভ্রমণকালে চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, ডাকার্নব, কৃষ্ণপাদের দোহা ও সরহপাদের দোহা এই চারটি পুঁথি রাজ গ্রন্থাগার থেকে আবিষ্কার করেন। এর মধ্যে চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, চর্যাপদ নামে পরিচিত এবং এটি বাংলা ভাষা ও সঙ্গীতের প্রাচীনতম নিদর্শন। এটি মূলত ৫১টি গানের সংকলন হলেও তিনি পান সাড়ে ছেচল্লিশটি পদ। ১৯১৬ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে হাজার বছরের পুরান বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধ গান ও দোহা নামে প্রকাশ করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
মহাকাব্যের তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য লিখুন।
মহাকাব্যের তিনটি প্রধান বৈশিষ্ট্য নিয়ে দেওয়া হলো:
১. মহাকাব্যের কাহিনি হবে কোনো পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক ঘটনা। যেমন: দ্য ইলিয়াড এবং দ্য ওডিসি (The Iliad and The Odyssey) মহাকাব্যগুলো ৮৫০ এবং ৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে গ্রীক কবি দ্বারা রচিত হয়েছে। এই কবিতাগুলো ছিল ট্রোজান যুদ্ধের ঘটনা এবং রাজা ওডিসিয়াসের ট্রয় থেকে প্রত্যাবর্তন যাত্রার বর্ণনা নিয়ে।
২. মহাকাব্যের সর্গ বিভাজন থাকবে, কমপক্ষে নয়টি ও সর্বাধিক ত্রিশটি সর্গ থাকবে। যেমন: মেঘনাদবধ মহাকাব্য: কাব্যটি মোট নয়টি সর্গে বিভক্ত।
৩. মহাকাব্যের কাহিনি স্বর্গ-মর্ত্য ও পাতাল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করবে। যেমন: দ্য ডিভাইন কমেডি (The Divine Comedy) দান্তে আলেগিরির একটি মহাকাব্য যা ১৩২০ সালে রচিত হয়েছিল। এর বিষয় হল নরক, পার্পেটরি এবং স্বর্গের মধ্য দিয়ে ভ্রমণকারী চরিত্র হিসাবে দান্তের একটি বিশদ বিবরণ।
কবি বিহারীমান চক্রবর্তীর বিশেষত্ব নিরূপণ করুন।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম গীতি কবি বিহারীলাল চক্রবর্তী (১৮৩৫-১৮৯৪) কবিতার অতি আবেগ ছন্দে ও ভাষায় কিছু কিছু শিথিলতা নিয়ে এসেছে। তা সত্ত্বেও তার কবিতা বাংলা কাব্যসাহিত্যের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কারণ আখ্যানকাব্য মহাকাব্য ধারার পর তিনিই প্রথম বাংলা কাব্যের ইতিহাসে গীতিকবিতার উৎস-মুখ খুলে দিয়েছিলেন। 'ভোরের পাখি' কবি বিহারীলালের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল সঙ্গীত শতক (১৮৬২), 'বঙ্গসুন্দরী' (১৮৭০), 'নিসর্গ সন্দর্শন' (১৮৭০), 'বন্ধুবিয়োগ' (১৮৭০), 'প্রেমপ্রবাহিনী' (১৮৭১), 'সারদামঙ্গল' (১৮৭৯) এবং সাধের আসন' (১৮৮৯)। সঙ্গীত শতক' কবির গানের সংকলন। 'নিসর্গ সন্দর্শন' কাব্যে মানবিক প্রকৃতির সঙ্গে কবি-হৃদয়ের সম্পর্ক স্থাপন হতে দেখা যায়। প্রকৃতিকে যথাযথভাবে দেখার ফলে কবি হৃদয়ের মুগ্ধতার পরিচয় ছড়িয়ে আছে 'সমুদ্র-দর্শন', 'নভোমণ্ডল' প্রভৃতি কবিতায়। জননী-জায়া- কন্যা-ভগিনী-প্রভৃতি বিবিধ মূর্তিধারিণী নারীর স্নেহ-মায়া মমতাময় রূপ ও সৌন্দর্যের সন্ধান করেছেন কবি বঙ্গসুন্দরী কাব্যে। নিজের এবং বন্ধুবর্ণের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং নিজের প্রেমানুভূতিকে কাব্যের আকারে রূপদান করেছেন কবি তাঁর বন্ধুবিয়োগ' ও 'প্রেমপ্রবাহিনী' কাব্যে। বিহারীলালের শ্রেষ্ঠ কাব্য হল 'সারদামঙ্গল', যেখানে কবির সৌন্দর্যচেতনা ও গীতিবৈশিষ্ট্য পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ বলেছেন “যে প্রত্যুষে অধিক লোক জাগে নাই এবং সাহিত্য কুঞ্জে বিচিত্র কলগীত কৃজিত হইয়া উঠে নাই। সে ঊষা লোকে কেবল একটি ভোরের পাখি সুমিষ্ট সুন্দর সুরে গান ধরিয়াছিল সে সুর তাহার নিজের।" রবীন্দ্রনাথের বউঠান কাদম্বরী দেবীর অনুরোধে কবি বিহারীলাল 'সাধের আসন কাব্য তার সৌন্দর্যভাবনার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন।
'মেঘনাদ' কাব্যের নায়ক কে এবং কেন?
সংস্কৃতশাস্ত্র অনুসরণ করে বলা যায় নায়কের দ্রুত ইতি ঘটে না, আদি থেকে অস্তা পর্যন্ত নায়ক চরিত্রের বিচরণ থাকবে সমগ্র রচনায় নায়ক উপস্থিত থেকে অপরাপর চরিত্র ও ঘটনা পরম্পরাকে নিয়ন্ত্রণ করবেন এবং নায়কের মধ্য দিয়েই লেখক তার জীবন দীক্ষা প্রকাশ করবেন। কাব্যের নামকরনে মেঘনাদ হলেও নায়ক রাবন। সংস্কৃত রামায়নে রাবণকে খল চরিত্রে দেখানো হলেও কবি মধুসূদন তাঁর কাব্যে রাবণকে নায়ক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। রাবণ একজন দেশ প্রেমিক। তাঁর মুখে উচ্চারিত হয়েছে " জন্মভূমি রক্ষা হেতু কে মরে ডরিতে"। আবার একই সাথে তিনি স্নেহ বাৎসল পিতা। পুত্রের মৃত্যুতে তারই মুখ থেকে উচ্চারিত হয়েছে, “হা পুত্র। বীর বাহু।” মেঘনাদবধ কাব্যের নায়ক রাবণ। কারণ রাবণ চরিত্রটির মধ্য দিয়ে কবির আত্মার প্রতিফলন ঘটেছে। ট্রাজেডির নায়ক সেই চরিত্রকে বোঝানো হয় যার মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকবে, ভালো মন্দ মিশ্রিত হবে এবং যার doing and suffering তার পরিণতিকে ত্বরান্বিত করবে। সুতরাং কাহিনী বর্ণনায় ও চরিত্র চিত্রনে মেঘনাদকে ছাপিয়ে উঠেছে রাবণ, তাই সে আলোচ্য গ্রন্থের নায়ক।
বাংলা গদ্যের বিকাশে ফোট উইলিয়াম কলেজের গুরুত্ব কতখানি?
বাংলা গদ্যের চর্চা ও বিকাশের ক্ষেত্রে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কেরি নির্মিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের গুরুত্ব অনন্যসাধারণ। শিক্ষাদানের উপযুক্ত পাঠ্যপুস্তক রচনার জন্য কেরি নিজেও যেমন উদ্যোগী হন, তেমনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের আরও কয়েকজন পণ্ডিতকে সেই কাজে উৎসাহিত করেন। এখান থেকে মাত্র ৫ বছরে ১৩টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয় যা বাংলা গদ্য বিকাশে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে।
উইলিয়াম কেরি: সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের কথাবার্তা সংবলিত কেরির প্রথম গ্রন্থ কথোপকথন (১৮০১) যার মাধ্যমে প্রথম বোঝা যায় যে বাংলা গদ্য যোগাযোগ ও মুক্তিচিন্তার বাহন হয়ে উঠতে পারে। তিনি আরো লিখেছেন ইতিহাস মালা (১৮১৩)। রামরাম বসু: পণ্ডিত রামরাম বসুর 'রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র' প্রথম মুদ্রিত বাংলা গদ্যগ্রন্থ। আরবি-ফারসি শব্দ মেশানো এই গ্রন্থের সাধু গদ্যরীতি যথেষ্ট স্বচ্ছন্দ।
মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার: মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের বত্রিশ সিংহাসন-এর গদ্যে কিছু আড়ষ্টতা থাকলেও 'রাজাবলি, প্রবোধচন্দ্রিকা'য় ক্লাসিক গদ্য- নির্মাণরীতি দেখা যায়।
এঁরা ছাড়াও ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের লেখকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন- গোলকনাথ শৰ্মা: 'হিতোপদেশ' (১৮০২); তারিণীচরণ মিত্র: ‘ঈশপের গল্প' (১৮০৩); রাজীবলোচন মুখোপাধ্যায়: মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র রায়সা চরিত্র' (১৮০৫): চণ্ডীচরণ মুনসি: 'তোতা ইতিহাস' (১৮০৫); হরপ্রসাদ রায়: "পুরুষপরীক্ষা' (১৮১৫)। বাংলা গদ্যের সূচনা পর্বে গদ্যের এই বিকাশ ও বিবর্তনে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ভূমিকা তাই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
কাজী নজরুল ইসলামের 'রিক্তের বেদন', 'যুগবাণী' ও 'চক্রবাক' কী জাতীয় গ্রন্থ?
'রিক্তের বেদন' কাজী নজরুল ইসলামের রচিত একটি গল্পগ্রন্থ। মোট ৮টি গল্প নিয়ে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম প্রকাশিত হয় এই গ্রন্থ। বাউন্ডেলের আত্ম-কাহিনী, মেহের নেগার, দূরন্ত পথিক, সাঝের তাঁরা, রাক্ষুসি, সালেক, স্বামী হারা প্রভৃতি এই গল্পগ্রন্থের গল্প। 'যুগবাণী' নজরুলের প্রথম গদ্যগ্রন্দ। 'নবযুগ' পত্রিকায় লেখা কাজী নজরুল ইসলামের কয়েকটি নিবন্ধনের সংকলন 'যুগবাণী'। এটি তার প্রথম নিষিদ্ধ গ্রন্থ। ১৯২২ সালে গ্রন্থটি নিষিদ্ধ হয়। লেখক বইটির মাধ্যমে উগ্র জাতীয়তাবাদ প্রচার করছেন এ কারণে নিষিদ্ধ হয়। "চক্রবাক' কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ। ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে এই গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে মোট কবিতার সংখ্যা ১৯টি। এই কাব্যে নজরুল বেদনার ছবি তুলে ধরেছেন; এতে রয়েছে প্রেমের অনুভূতি এবং অতীত সুখের স্মৃতিচারণা। ১৪০০ সাল চক্রবাক, কুহেলিকা প্রভৃতি এই কাব্যগ্রন্থের উল্লেখযোগ্য কবিতা।
নাট্যকার মুনীর চৌধুরীর পরিচয় দিন।
আবু নয়ীম মোহামম্মদ মুনীর চৌধুরী (২৭ নভেম্বর ১৯২৫ ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১) ছিলেন একজন বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক, ভাষাবিজ্ঞানী, বাগী এবং বুদ্ধিজীবী। তিনি সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক রণেশ দাশগুপ্তের অনুরোধে 'কবর' নাটকটি লেখেন। এটি একটি একান্ধীকা নাটক "রক্তাক্ত প্রান্তর" তার আরও একটি বিখ্যাত নাটক। স্বল্প পরিসরে এবং নারী চরিত্র ছাড়া কিভাবে নাটক লেখা এবং অভিনিত হতে পারে তা তিনি দেখিয়েছেন। তার অনূদিত নাটক (অনুবাদ) মুখরা রমণী বশীকরণ যা শেক্সপিয়ারের "The Taming of the Shrew" এর অনুবাদ। তাঁর আবিষ্কারমূলক গ্রন্থ- An Illustrated Brochure on Bengali Typewriter (1965), তিনি ১৯৬৫ সালে প্রথম বাংলা টাইপ রাইটিংয়ের কী-বোর্ড নির্মাণ করেন, যা "মুনীর অপটিমা" নামে পরিচিত। ১৯৬৬ সালে "সিতারা-ই ইমতিয়াজ" খেতাব লাভ করেন। ১৯৭১ এর মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে "সিতারা-ই-ইমতিয়াজ" খেতাব বর্জন করেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের অন্যতম একজন শিকার।
নারী জাগরণে বেগম রোকেয়ার অবদান আলোচনা করুন।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (৯ ডিসেম্বর ১৮৮০-৯ ডিসেম্বর ১৯৩২) হলেন একজন বাঙালি চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি বাঙালি মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং প্রথম বাঙালি নারীবাদী লেখিকা। রোকেয়া মাত্র ৫/৬ জন ছাত্রী নিয়ে ১৯০৯ সালের ১ অক্টোবর 'সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল" নামে মেয়েদের একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তী পর্যায়ে হাই স্কুলে পরিণত হয়। ১৯১৬ সালে তিনি মুসলিম বাঙালি নারীদের সংগঠন আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলার নারী শিক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। মতিচূর (১৯০৪) প্রবন্ধগ্রন্থে রোকেয়া নারী-পুরুষের সমকক্ষতার যুক্তি দিয়ে নারীদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করে সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় আহ্বান জানিয়েছেন এবং শিক্ষার অভাবকে নারীপশ্চাৎপদতার কারণ বলেছেন। তিনি বলেছেন “ সংসার জীবন দুই চাকার বিশিষ্ট গাড়ির মতো, যার একটি হলো স্বামী অন্যটি স্ত্রী একটি চাকা নষ্ট হলে গাড়ি চলতে পারে না" তার সুলতানার স্বপ্ন (১৯০৫) নারীবাদী ইউরোপিয়ান সাহিত্যের ক্লাসিক নিদর্শন বলে বিবেচিত।
উপন্যাসের নাম উল্লেখ করে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর স্বাতন্ত্র্য্ নিরূপণ করুন।
বাংলা উপন্যাসে প্রথম পরাবাস্তববাদী লেখক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ (১৯২২-৭১)। তিনি বাংলাদেশের একজন শ্রেষ্ঠ যথার্থ আধুনিক ঔপন্যাসিক। উপন্যাসের বিষয় ও আঙ্গিকের ক্ষেত্রে তিনি বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। তার ঔপন্যাসিক সত্তা দার্শনিক চেতনায় সমৃদ্ধ ফলে তা পাঠকের কাছে অভিনব হিসেবে অভিহিত হয়েছে। কাহিনী বিন্যাস ও চরিত্র চিত্রনে তিনি গতানুগতিক পদ্ধতি পরিহার করেছেন। ঘটনার প্রতিক্রিয়াকে তিনি প্রকাশ করেছেন রূপক প্রতীকের মাধ্যমে ইঙ্গিতময়তায়। বাংলা সাহিত্যে যেসব উপন্যাস প্রবল সাড়া ফেলেছে। সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহর উপন্যাসগুলো তার মধ্যে অন্যতম।
তার প্রথম লেখা উপন্যাসে লালসালু (১ম প্রকাশ ১৯৪৮, হয় প্রকাশ ১৯৬০)। এই উপন্যাসে তিনি দেখিয়েছেন গ্রাম বাংলার অশিক্ষা কুশিক্ষা। ধর্মের নামে স্বার্থান্ধ মানুষের কার্যকলাপ এখানে ফুটে উঠেছে। ধর্মকে ব্যবহার করে একজন ভন্ড কিভাবে সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিতে পরিণত হয় তা তিনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন। এই উপন্যাসের উল্লেখযোগ্য চরিত্র হলো মজিদ, জমিলা, খালেক ব্যাপারী, রহিমা, হাসুনীর মা ও আক্কাস প্রমুখ। তার দ্বিতীয় উপন্যাস চাঁদের অমাবস্যা (১৯৬৪)। এই উপন্যাসের স্কুল শিক্ষক আরেফ আলী এবং গ্রামের ভন্ড দরবেশ কাদেরের পরাবাস্তবাদী দ্বন্দ্ব ফুটে উঠেছে। উনবিংশ শতাব্দীর শিক্ষিত যুবকদের উদাহরণ হলো আরেফ আলী। সে প্রতিবাদী বিবেকের তাড়নায় দংশিত।
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর তৃতীয় উপন্যাস "কাঁদো নদী কাঁদো” (১৯৬৮) যা তাঁর রচিত চেতনা প্রবাহরীতির একটি উপন্যাস। আঙ্গিক প্রকরণে পাশ্চাত্যের ভাব থাকলেও এর সমাজ জীবন পরিবেশ ও চরিত্রাদি স্বদেশীয়। শুকিয়ে যাওয়া বাকাল নদীর প্রভাবতাড়িত কুমুরডাঙ্গার মানুষের জীবনচিত্র এতে অঙ্কিত হয়েছে। এই উপন্যাসের একদিকে প্রতারক প্রেমিকের যন্ত্রণা ও অপরদিকে সরকারি হাকিম হওয়া সত্ত্বেও আত্মপাপ মোচনে নায়কের আত্মহত্যার চিত্র অত্যান্ত সুনিপুন ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
সুতরাং মানব-অস্তিত্বের জিজ্ঞাসা ও তার চৈতন্যের বিভিন্ন স্তর উন্মোচনই সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ঔপন্যাসিক সত্ত্বার প্রধান অন্বেষন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রমণকাহিনিভিত্তিক তিনটি গ্রন্থের নাম লিখুন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রমণ কাহিনীভিত্তিক তিনটি গ্রন্থের নাম নিম্নে দেওয়া হলো:
১. যুরোপ প্রবাসীর পত্র (১৮৭৮)
২. জাপান যাত্রী (১৯১৬)
৩.রাশিয়ার চিঠি (১৯৩০)
শিক্ষার লক্ষ্য হল একজন মানুষকে সম্পূর্ণরূপে নিজের এবং সমাজের জন্য উপযুক্ত করে তোলা। এর অর্থ সমগ্র মানুষ, তার শরীর, মন এবং আত্মার বিকাশ করা। এটি এমন শিক্ষা যার লক্ষ্য একটি শিশুকে সুযোগ প্রদান করা যাতে এটি তার সমস্ত সুপ্ত গুণাবলীকে আলোকিত করতে পারে। একজন শিক্ষিত মানুষকে হতে হবে নম্র, ভদ্র, চিন্তাশীল, সৃজনশীল, সদয়, শ্রদ্ধাশীল, সহানুভূতিশীল এবং সহযোগিতামূলক। তাই আমাদের সবার উচিত শিক্ষিত হয়ে মানবতা ও রাষ্ট্রের সেবা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা।
মুক্তিযুদ্ধ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের কৃষির যান্ত্রিকীকরণ
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও তার প্রতিকার
রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ ও বিশ্বপরিস্থিতি
পদ্মা সেতু বাঙালির গর্ব, বাঙালির অহংকার