লেখকের দায়িত্ব
একজন লেখক তিনিই যিনি লেখেন। তবে সব লেখা লিখেই লেখক হওয়া যায় না। লেখক সব ধরনের হতে পারে। তবে সৃজনশীল লেখকই হচ্ছে আমাদের মূল কেন্দ্রবিন্দু। লেখক হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম একটি স্বাধীন সত্ত্বা।
একজন লেখক পুরোপুরি তার নিজের সত্ত্বার ওপরে বেঁচে থাকে। অনেকেই লেখক হবার সহজ উপায় খোঁজ করে। কিন্তু পড়তে পড়তে আর লিখতে লিখতেই শুধুমাত্র লেখক হওয়া যায়। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। লেখক অনেক ধরনের হতে পারে।
একজন সাংবাদিকও একজন লেখক। উপন্যাস, গল্প, কবিতা, ছড়া, সাহিত্য, প্রবন্ধ, রম্য, ব্লগ সব ধরনের লেখা যারা লেখে তারাই লেখক। অনেকেই মস্তিষ্কের মধ্যে ওকটা লেখার শক্তি পেয়ে যায় আর অনেকে হয়ত শিখে শিখে লেখক হয়।
সমাজ সভ্যতা কখনোই পুরোপুরি একজন লেখকের পক্ষে থাকে না। বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপক্ষে চলে যায়। স্বাভাবিকভাবেই একজন লেখক তার কলমের আঘাতে জর্জরিত করতে চায় সকল অন্যায়, অপবাদ। তাই হয়ত বেঁধে যেতে পারে সংঘাত। কলমই হচ্ছে একজন লেখকের দাঁড়ানোর জায়গা। কলম ছাড়া লেখকের অস্তিত্ব বিলীন। তবে সবাইকে যে প্রতিবাদ লিখতে হবে এমন কোনো কথা। কেউ কেউ মনোরঞ্জনের জন্যও লেখে। অনেকে আবার চাটুকারিতা করতে লেখে। কেউ আবার কীভাবে পুরষ্কার তুলে নেওয়া যায় সেই ধান্দা করার জন্য লেখে।
একজন লেখক হয়ে উঠতে পারে ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্যকারী। সে কলমের ছোঁয়ায় প্রতিবাদ করতে অন্যায়ের আর ফুটিয়ে তুলবে ন্যায়ের কথা। লেখকের কলমের কালি প্রেরণার সুর হয়ে গান গাইবে। আর অশ্রুসিক্ত নয়নে হাসির ঝলক আনবে লেখকের কলম। একজন লেখকের প্রাণ তার লেখা, তার লেখার ভঙ্গি। সে তার লেখা দিয়ে বাঁচিয়ে তুলতে পারবে অসুস্থ কোনো সভ্যতাকে। লেখক তার কলম দিয়ে জাগ্রত করতে পারবে মানুষের ভীতরে লুকিয়ে থাকা অদম্য সাহস।
একজন লেখক কল্পনাকে নিয়ে আসতে পারে বাস্তবে। আমাদের নিয়ে যেতে পারে কল্পনার গহীন বনে। লেখক আমাদের সবাক যুগ থেকে অবাক যুগে নিয়ে যেতে পারে মুহূর্তের মাঝেই। লেখক জাগাতে পারে প্রেম, লেখক জাগাতে পারে নতুন কাজের স্পৃহা।
অনেকেই মনে করে লেখকের সকল বিষয়ে দ্বায় আছে। কিন্তু লেখকের মূলত কারো কাছেই কোনো দ্বায় নেই। তার দ্বায় থাকে শুধু নিজের মনের কাছে, নিজের বিবেকের কাছে, নিজের সুপ্ত চেতনার কাছে। সমাজ কি ভাববে তা নিয়ে লেখক মাথা ঘামাবে না। লেখক ভয়ে নাথা নোয়াবে না। লেখক যতদিন বাঁচবে বীরের মতোই বাঁচবে।
সারা বিশ্বেই লেখকরা নির্যাতনের শিকার হয়। অনেকেই বলে থাকে লিখে কিছুই হয় না। তাই যদি হতো তাহলে লেখার জন্য লেখকের শাস্তি হতো না। লেখকের ফাঁসি হতো না।
লেখকের কলমে অনেক জোর। সেই জোর ভেঙে চুরে গুড়িয়ে দিতে পারে যেকোনো কিছু। বিশেষ করে সাংবাদিকরা বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত হয় অনিয়মের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে। শাস্তি, সাজা বহু কিছু তাদের সহ্য করতে হয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখলে হুমকি আসে, হামলা মামলা বহু ঘটনাই ঘটে। কারণ শাসক, শোষক আর অন্যায়কারীদের অনেক ক্ষমতা। লেখকের সমাজের দায়মুক্তির জন্য জীবনও দিতে হয়। তাইতো একজন লেখক সমাজের শক্তি, সমাজের সম্পদ।
সমকালীন বাংলা নাটক
সাহিত্য হচ্ছে মানুষের চিন্তা-ভাবনা, অনুভূতি তথা মানব-অভিজ্ঞতার কথা বা শব্দের বাঁধনে নির্মিত নান্দনিক বহিঃপ্রকাশ। এই অর্থে গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি উচ্চতর গুণাবলি সমন্বিত বিশেষ ধরনের সৃজনশীল মহত্তম শিল্পকর্ম। সাহিত্য-শিল্পীগণ যখন ‘অন্তর হতে বচন আহরণ’ করে আত্মপ্রকাশ কলায় ‘গীতরস ধারা’য় সিঞ্চন করে ‘আনন্দলোকে’ নিজের কথা- পরের কথা- বাইরের জগতের কথা আত্মগত উপলব্ধির রসে প্রকাশ করেন- তখনই তা হয়ে ওঠে সাহিত্য। রবীন্দ্রনাথের কথায় “বহিঃপ্রকৃতি এবং মানব-চরিত্র মানুষের মধ্যে অনুক্ষণ যে আকার ধারণ করিতেছে, যে-সঙ্গীত ধ্বনিত করিয়া তুলিতেছে, ভাষা-রচিত সেই চিত্র এবং সেই গানই সাহিত্য।…সাধারণের জিনিসকে বিশেষভাবে নিজের করিয়া – সেই উপায়ে তাহাকে পুনরায় বিশেষভাবে সাধারণের করিয়া তোলাই হচ্ছে সাহিত্যের কাজ।” [রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্য] সাহিত্য সত্য-সুন্দরের প্রকাশ হিসেবে প্রবহমাণ সময়ে যা ঘটে – সে-সবের মধ্য থেকে যা মহৎ, যা বস্তুসীমাকে ছাড়িয়ে বাস্তবাতীত প্রকাশ করে, যা জীবনের জন্য কল্যাণময় এবং মহৎ আদর্শের দ্যোতক তাকেই প্রকাশ করে। আসলে মহৎ সাহিত্য তাই- যা একাধারে সমসাময়িক-শাশ্বত-যুগধর্মী-যুগোপযোগী-যুগোত্তীর্ণ। সাহিত্য কেবল পাঠককে আনন্দ দেয় না- সমানভাবে প্রভাবিত করে পাঠক এবং সমাজকে।
আভিধানিকভাবে ‘সহিতের ভাব’ বা ‘মিলন’ অর্থে ‘সাহিত্য’ হলো কাব্য, নাটক, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি সৃজনশিল্পের মাধ্যমে এক হৃদয়ের সঙ্গে অন্য হৃদয়ের সংযোগ স্থাপন; সাহিত্য¯্রষ্টা-সাহিত্যের সাথে পাঠকের এক সানুরাগ বিনিময়। কিন্তু আভিধানিক অর্থের নির্দিষ্ট সীমায় সাহিত্যের স্বরূপ-গতি-প্রকৃতি-বৈচিত্র্য ও বিস্তৃতির সম্যক ধারণা দেওয়া যেমন অসম্ভব, কোনো বিশেষ সংজ্ঞায় তাকে সুনির্দিষ্ট করে দেওয়াও তেমন দুঃসাধ্য। বাচ্যার্থ ও ব্যঞ্জনার্থর সীমাকে অতিক্রম করে নানা রূপে, রসে, প্রকরণ ও শৈলীতে সাহিত্যের নিরন্তর যাত্রা সীমা থেকে অসীমে। প্রত্যক্ষ সমাজপরিবেশ তথা সমকালীন বাস্তব পারিপার্শ্বিক, নিসর্গপ্রীতি ও মহাবিশ্বলোকের বৃহৎ-উদার পরিসরে ব্যক্তিচৈতন্য ও কল্পনার অন্বেষণ ও মুক্তি- আর এইভাবেই শ্রেণিবিভাজন, নামকরণ ও স্বরূপমীমাংসার প্রচেষ্টাকে ছাপিয়ে উঠে সাহিত্যের যাত্রা সীমাহীনতায়। প্রকৃত সাহিত্য তাই যেমন তার সমসময় যা যুগমুহূর্তের, তেমনই তা সর্বকালের সর্বজনের। মার্কসবাদী সাহিত্যতত্ত্বে বাস্তব সমাজজীবনকে ‘ভিত্তি’ আর শিল্প-সাহিত্যকে সমাজের উপরিকাঠামোর [ঝঁঢ়বৎংঃৎঁপঃঁৎব] অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়। সাহিত্যের মৌল উপকরণসামগ্রী আহৃত হয় জীবনের ভা-ার থেকে- সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বৈরিতার বিচিত্র-অনিঃশেষ ভা-ার থেকে। সাহিত্যসৃষ্টির মূলে সক্রিয় যে সৃজনী-ব্যক্তিত্ব তা নিছক বিমূর্ত কোনো সত্তা নয়; আত্মপ্রকাশ ও মানবিক সংযোগ ও বিনিময়ের বাসনায় অনুপ্রাণিত সে সত্তা তার ভাব-ভাবনা, বোধ ও বিশ্বাসকে এক আশ্চর্য কৌশলে প্রকাশ করে জনসমক্ষে কোনো একটি বিশেষ রূপ-রীতি-নীতির আশ্রয়ে। ব্যক্তিক অনুুভূতি-যাপিতজীবন-মিশ্রকল্পনার জগৎ থেকেই সৃষ্টি হয় সাহিত্যের; যুগান্তরের আলোকবর্তিকা হিসেবে সাহিত্য সত্যের পথে সবসময় মাথা উঁচু করে থেকেছে- সত্যকে সন্ধান করেছে। আসলে সাহিত্য এমনি এক দর্পণ- যাতে প্রতিবিম্বিত হয় মানবজীবন, জীবনের চলচ্ছবি, পরিবেশ-প্রতিবেশ, সমাজজীবনে ঘটমান ইতিহাস- ইতিহাসের চোরাস্রােত নানাবিধ কৌণিক সূক্ষ্মতায়।
সাধারণত আত্মপ্রকাশের বাসনা, সমাজ-সত্তার সঙ্গে সংযোগ কামনা, অভিজ্ঞতার আলোয় কল্পলোক নির্মাণ এবং রূপপ্রিয়তা- এই চতুর্মাত্রিক প্রবণতাই মানুষের সাহিত্য-সাধনার মৌল-উৎস। চতুর্মাত্রিক প্রবণতার [আত্মপ্রকাশের কামনা, পারিপার্শ্বিকের সাথে যোগাযোগ বা মিলনের কামনা, কল্প-জগতের প্রয়োজনীয়তা এবং সৌন্দর্য-সৃষ্টির আকাক্সক্ষা বা রূপমুগ্ধতা] মধ্যে সমাজসত্তার সঙ্গে সংযোগ-কামনা এবং অভিজ্ঞতার আলোয় কল্পলোক নির্মাণ- এই উৎসদ্বয়ের মধ্যে নিহিত রয়েছে সাহিত্য ও সমাজের মধ্যে আন্তর-সম্পর্কের প্রাণ-বীজ। সমাজ শিল্পীকে সাহিত্য-সাধনায় প্রণোদিত করে। ‘সহৃদয়-হৃদয় সংবাদ’এর মাধ্যমে সাহিত্যিকগণ লেখক-পাঠকের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেন- উভয়ের হৃদয়বীণার তারগুলোকে একই সুতায় গেঁথে দেন। এর কারণে সাহিত্য দেশ-কাল-সমাজের সীমা অতিক্রম করে সর্বসাধারণের হৃদয়কে আকর্ষণ করে। এর ফলে সাহিত্য হয়ে ওঠে সার্বজনীন-সর্বকালের মানুষের হৃদয়ের সামগ্রী এবং সাহিত্য¯্রষ্টাও হয়ে ওঠেন অনেক বড়। কিন্তু বর্তমান বাংলা সাহিত্যচর্চার গতি-প্রকৃতি, সমস্যা-সংকট-সমাধান কোন দিকে? এসব বিষয়ের সন্ধান- এ প্রবন্ধের অন্বিষ্ট।
লোকশিল্প
লোক শিল্প প্রতি টা মানুষের
আমাদের লোকশিল্প প্রবন্ধটি আমাদের লোককৃষ্টি গ্রন্থ থেকে গৃহীত হয়েছে। লেখক এ প্রবন্ধে বাংলাদেশের লোকশিল্প ও লোক-ঐতিহ্যের বর্ণনা দিয়েছেন । এ বর্ণনায় লোকশিল্পের প্রতি তার গভীর মমত্ববোধের পরিচয় রয়েছে।
আমাদের নিত্যব্যবহার্য অধিকাংশ জিনিসই এ কুটিরশিল্পের ওপর নির্ভরশীল ।
শিল্পগুণ বিচারে এ ধরনের শিল্পকে লোকশিল্পের মধ্যে গণ্য করা যেতে পারে । পূর্বে আমাদের দেশে যে সমস্ত লোকশিল্পের দ্রব্য তৈরি হতো তার অনেকগুলোই অত্যন্ত উচ্চমানের ছিল। ঢাকাই মসলিন তার অন্যতম। ঢাকাই মসলিন অধুনা বিলুপ্ত হলেও ঢাকাই জামদানি শাড়ি অনেকাংশে সে স্থান অধিকার করেছে।
বর্তমানে জামদানি শাড়ি দেশে-বিদেশে পরিচিত এবং আমাদের গর্বের বস্তু। নকশি কাথা আমাদের একটি গ্রামীণ লোকশিল্প। এ শিল্প আজ বিলুপ্তপ্রায় হলেও এর কিছু কিছু নমুনা পাওয়া যায়। আপন পরিবেশ থেকেই মেয়েরা তাদের মনের মতো করে কীথা সেলাইয়ের অনুপ্রেরণা পেতেন । কাঁথার প্রতিটি সুচের ফোঁড়ের মধ্যে লুকিয়ে আছে এক-একটি পরিবারের কাহিনী, তাদের পরিবেশ, তাদের জীবনগাঁথা ।
আমাদের দেশের কুমোরপাড়ার শিল্পীরা বিভিন্ন ধরনের তৈজসপত্র ছাড়াও পোড়ামাটি দিয়ে নানা প্রকার শৌখিন দ্রব্য তৈরি করে থাকে। নানা প্রকার পুতুল, মূর্তি ও আধুনিক রুচির ফুলদানি, ছাইদানি, চায়ের সেট ইত্যাদি তারা গড়ে থাকে।
খুলনার মাদুর ও সিলেটের শীতলপাটি সকলের কাছে পরিচিত। আমাদের দেশের এই যে লোকশিল্প তা সংরক্ষণের দায়িত আমাদের সকলের । লোকশিল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে পারি।
আমাদের অর্থনৈতিক সম্পদ
বাংলাদেশ, একটি দ্রুত উন্নতি লক্ষ্য নির্ধারণ করা দেশ, যা প্রচুর অর্থনৈতিক সম্পদের বেশিরভাগ সম্পদ নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই দেশের অর্থনৈতিক সম্পদ মৌলিকভাবে চারটি প্রধান উৎস থেকে আসে: জমি, কাজ, উদ্যোগ, এবং মানুষের কাজের দক্ষতা। এই সম্পদের বিকাশে বিভিন্ন রাজনৈতিক, আর্থিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদের মূল স্তম্ভ হল কৃষি। দেশটি একটি প্রধানত কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির মূল হিসেবে প্রধানত শস্য ও ফসল চাষ প্রসঙ্গে বিকাশ হয়েছে। বাংলাদেশে প্রধানত ধান, পাট, মশুর ডাল, আখ, পটল, পেঁপে, তেল সহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়। অত্যন্ত উচ্চ মানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদনের ফলে এই খাদ্য পণ্য রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক সম্পদের গড়াতে সাহায্য করে।
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উৎস হল প্রবৃদ্ধি ও শিক্ষাগত উন্নতি। বাংলাদেশে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের অভাব কমে আসছে এবং মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি করছে। বিশেষত, প্রযুক্তির আগমন এবং বিনিয়োগে বৃদ্ধি নেওয়া হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক সম্পদের উন্নতির পথে সাহায্য করছে।
অন্যান্য উৎস হিসেবে প্রযুক্তিবিদ্যা এবং সেবা অংশ গুলির অগ্রগতি আছে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক সম্পদ হল তার মানুষের চাকরিভার্থী শ্রমিকেরা। তাদের দক্ষতা, উদ্যোগ, ও সামর্থ্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যদিও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ উন্নতির পথে অনেক উত্সাহজনক প্রগতি হয়েছে, তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ র
য়েছে। প্রধানতঃ গরিব মানুষের জন্য আর্থিক সম্পদের অগ্রগতি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখনও বেশিরভাগ লোকের মধ্যে বৃদ্ধির অভাব আছে। তাছাড়া, পরিবেশের সম্পদ সংরক্ষণের জন্য সঠিক প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা প্রয়োজন।
পুনর্নির্মাণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পদের বিস্তার ও উন্নতি নিশ্চিত করতে পারে। সঠিক নীতি নির্ধারণ, উদ্যোগের বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত প্রবর্তন এবং শিক্ষাগত উন্নতি এমন পরিবর্তন নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে।
শেষ কথায়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা দেশটির সমৃদ্ধি ও উন্নতির সাথে অবিভাজ্যভাবে সংযোগিত। একটি দ্রুত বৃদ্ধির উপায় হল সঠিক পরিকল্পনা, ব্যবস্থাপনা এবং উদ্যোগের বৃদ্ধি করা। এই প্রস্তুতি নেওয়ার মাধ্যমে, বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক সম্পদ উন্নতির পথে আরও এগিয়ে যেতে পারে এবং তার মানুষের জন্য আরো উন্নত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে।
বিক্ষুব্ধ পূর্ব ইউরোপ
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি
পররাষ্ট্রনীতি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতির সম্প্রসারণ। পররাষ্ট্রনীতি হলো কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্রের গৃহীত সেসব নীতি যা রাষ্ট্র তার রাষ্ট্রীয় স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে সম্পাদন করে থাকে। অন্য রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাষ্ট্রের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতাকে তুলে ধরে।
১৯৭১ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। স্বাধীনতা লাভের পরবর্তী সময়ে ভৌগোলিক অবস্থান, স্বল্প পরিসরের ভূখন্ড এবং সীমিত অর্থনৈতিক সম্পদ ইত্যাদি বিভিন্ন নিয়ামক বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণের সুযোগকে সীমাবদ্ধ করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি মূলত বহিঃশক্তির প্রভাব থেকে দেশের সাবভৌমত্ব ও ভূখন্ডকে রক্ষা করার মতো বিষয়েই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে।
পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কীয় সাংবিধনিক বিধান বাংলাদেশের সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাসমূহ বাংলাদেশ সংবিধানের ২৫ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে। এগুলি হলো:
জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও সমতার প্রতি শ্রদ্ধা, অপর রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করা, আন্তর্জাতিক বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের সনদে বর্ণিত নীতিসমূহের প্রতি শ্রদ্ধা, এ সকল নীতিই হবে রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং এ সকল নীতির ভিত্তিতে-
১. রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকা এবং সাধারণ ও পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের জন্য চেষ্টা করবে; প্রত্যেক জাতির স্বাধীন অভিপ্রায় অনুযায়ী পথ ও পন্থার মাধ্যমে অবাধে নিজস্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ ও গঠনের অধিকার সমর্থন করবে; এবং সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ বা বর্ণ্যবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন করবে।
২. রাষ্ট্র ইসলামী সংহতির ভিত্তিতে মুসলিম দেশসমূহের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক সংহত, সংরক্ষণ এবং জোরদার করতে সচেষ্ট হবে। সংবিধানের ৬৩ অনুচ্ছেদে যুদ্ধ-ঘোষণা সংক্রান্ত নীতি উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে সংসদের সম্মতি ব্যতিত যুদ্ধ ঘোষণা করা যাবে না, কিংবা প্রজাতন্ত্র কোনো যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে না। অনুচ্ছেদ ১৪৫(ক)তে বৈদেশিক চুক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে: ‘বিদেশের সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হবে, এবং রাষ্ট্রপতি তা সংসদে পেশ করার ব্যবস্থা করবেন। তবে শর্ত হচ্ছে যে, জাতীয় নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট অনুরূপ কোন চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হবে।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতিসমূহ পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কিছু মূলনীতি অনুসরণ করে থাকে। জাতিসংঘ এবং ন্যামের মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ এসব সংগঠনের মূলনীতিসমূহ মেনে চলে, এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান নীতিসমূহ এসব সংগঠনের নীতির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রধান চারটি মূলনীতি হলো:
সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয় একটি দরিদ্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীল হবার কারণে বাংলাদেশকে বিভিন্ন মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হতে হয়। এ কারণেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি হিসেবে বলেছিলেন, ‘আমাদের একটি ক্ষুদ্র দেশ, কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়, আমরা চাই সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব’।
অন্য রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও ভৌগোলিক অখন্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য। জাতিসংঘ সনদের ২(৪) ধারায় বলা হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সকল সদস্য-রাষ্ট্র আঞ্চলিক অখন্ডতার বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোনো রাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের ভীতি প্রদর্শন থেকে এবং জাতিসংঘের উদ্দেশ্যের সংঙ্গে সামঞ্জস্যহীন কোনো উপায় গ্রহণ করা থেকে নিবৃত্ত থাকবে’।
অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা জাতিসংঘ সনদের ২(৭) ধারায় বলা হয়েছে যে, ‘বর্তমান সনদ জাতিসংঘকে কোনো রাষ্ট্রের নিছক অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অধিকার দিচ্ছে না বা সেরূপ বিষয়ের নিষ্পত্তির জন্য কোনো সদস্যকে জাতিসংঘের দারস্থ হতে হবে না; কিন্তু সপ্তম অধ্যায় অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে এই নীতি অন্তরায় হবে না’। জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এই মূলনীতির উপর তার পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করেছে, যা অন্য রাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রকাশিত।
২০০৯ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে, এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনয়নের কথা ঘোষণা করেন। বাংলাদেশের নিরাপত্তা ধারণা বিবেচনায় রেখে প্রায় তিন দশক পর ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি সরকার রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে রাশিয়ার সাহায্যে দেশে পারমাণবিক প্ল্যান্ট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সময়ের পরিবর্তনের সাথে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ভবিষ্যত অর্জনের সম্ভাবনা অনেকটা ক্ষীণ হয়ে পড়ছে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী এবং আঞ্চলিক রাষ্ট্রসমূহের সাথে এবং বিশ্বের আরো কিছু রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়’ একটি সত্তুরের দশকের ধারণা, যা প্রায় ৪০ বছরের পুরনো। বর্তমান পরিবর্তিত বিশ্ব প্রেক্ষাপটে পুরনো ধারার পরররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত তার অর্জনের সম্ভাবনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। সুতরাং পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য নিয়ে নতুন কৌশল-পরিকল্পনা করা উচিত, যার মাধ্যমে পরিবর্তিত বিশ্বে নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে। [ঊর্মি হোসেন]
নারী-নির্যাতন প্রতিরােধ আন্দোলন
হাজারো দুঃখ-কষ্ট লুকিয়ে থাকা এক শব্দ নারী। নারী মানে হাজারো স্বপ্ন বিসর্জন দেওয়া এবং স্রোতের প্রতিকূলে গিয়ে লড়াই করে যাওয়া এক টুকরো আত্মবিশ্বাস। এটি শুধুমাত্র একটি শব্দ নয় বরং এটির হাজার অর্থ এবং এতে লক্ষ-কোটি অনুভূতি বিদ্যমান।
বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় এই নারী শব্দটা বড়ই অবহেলিত। নিজের শখ, আহ্লাদ, ইচ্ছে বিসর্জন দেওয়া এই নারী বর্তমানে কোনো না কোনোভাবে নির্যাতনের শিকার। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে হাজারো প্রতিবাদ, হাজারো বিক্ষোভ হলেও তাও যেন কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। নারী নির্যাতন বন্ধে আইন থাকা সত্ত্বেও নির্যাতনকারীরা সেই আইনে বৃদ্ধ আঙ্গুল দেখিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের কানে যেন তালা।
নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধে আইনের প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার প্রত্যাশিত বাস্তবায়ন প্রয়োজন। আমাদের নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রতিবাদ করতেই হবে এবং কোনভাবেই এই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। নারী নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের নজরদারি আরও বৃদ্ধি করতে হবে।
বর্তমান সময়ে নারী নির্যাতন অনেক বেশি দেখা যায়। এ যুগে নারী নির্যাতন একটি অভিশাপস্বরুপ। প্রতিদিন অহরহ নারী নির্যাতনের ঘটনা শুনা যায় ভোর হতে না হতেই। নারী নির্যাতনের এসব ঘটনা গণমাধ্যমে ছড়িয়েই আছে। এসব ঘটনা যেমন নারীর জন্য প্রভাব পড়ে তেমনি একটি পরিবার ও দেশের ওপরও পড়ে। তবে বেশি পড়ে নারীদের ওপর।
বর্তমানে সমাজে নারী উত্যক্তকরণ অর্থাৎ ইভটিজিং একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। ইভিটিজাররা হয়ে উঠেছে বেপরোয়া। তাদের অশালীন মন্তব্য, উপহাস, তুচ্ছ করা , শালীন আচরণ করা। নারীকে প্রাপ্য সম্মান করতে হবে। একজন নারী শিক্ষার্থী হিসেবে চাই এগুলা প্রতিরোধ করতে। প্রতিবাদ করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দোষীকে ধরিয়ে দিতে হবে।
অপরাধী অপরাধীই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ব্যাপকহারে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। সকল ধরনের প্রতিষ্ঠানে যৌন নির্যাতন বিরোধী সেল গঠন করতে হবে। যেকোনো মূল্যে এ অবস্থা থেকে আমাদের সমাজকে রক্ষা করতে হবে। যদি আমরা প্রতিরোধ করতে পারি তাহলেই কমবে আমাদের "নারী নির্যাতন"।
।
শিক্ষাই আলাে
শিক্ষা প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার। শিক্ষা মানুষকে নিজেকে জানতে ও চিনতে শেখায়। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ববােধ জাগ্রত করে, তার ভেতরের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগিয়ে তােলে। যে শিক্ষা শুধু খেয়ে-পরে বা ভােগবিলাসে জীবন কাটাতে বা বাঁচতে শেখায় তা কখনাে প্রকৃত শিক্ষা হতে পারে না। যে শিক্ষা জীবনকে সকলের সঙ্গে উপভােগ করতে এবং কল্যাণমুখী কাজে লাগাতে শেখায় না সেটি প্রকৃত শিক্ষা নয়। এ ধরনের শিক্ষা জীবনে সােনা ফলাতে পারে না। শিক্ষা। মানুষকে শেখায় ‘লােভে পাপ, পাপে মৃত্যু। অনেকের মতে, ‘শিক্ষা মনের একটি চোখ। তাই মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে শিক্ষার মাধ্যমে। শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ তার মানবিক গুণগুলাে অর্জন করে। শিক্ষার আলাে না হলে মানুষ আর পশুর মধ্যে কোনাে পার্থক্য থাকত না। আত্মশক্তিতে বলীয়ান মানুষই কর্তব্যপরায়ণ, বিবেকবােধ সম্পন্ন, সমব্যথী, সর্বোপরি সকল মানবিক গুণের অধিকারী। জ্ঞানশক্তি বা আত্মশক্তি না থাকলে মানুষ শিক্ষিত হয়েও কখনাে যথার্থ মানুষ হতে পারে না! ডিগ্রি বা সনদের কোনাে মূল্যই থাকে না যদি শিক্ষিত ব্যক্তি আত্মশক্তি ও জ্ঞানশক্তি অর্জন না করে। প্রতিটি মানুষ অফুরন্ত সম্ভাবনার খনি, সে কী হতে পারে তা সে নিজে জানে না, আর এ অজ্ঞতাই তার উন্নতির পথে বাধা। শিক্ষা মানুষের ভেতরে প্রতিভার আলাে জ্বালিয়ে অজ্ঞতাকে দূর করে তাকে আত্মশক্তিতে বলীয়ান করে, সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তােলে। মানুষ জ্ঞান আহরণ করলে অর্জন করে আত্মশক্তি, আর জ্ঞান নামক এ শক্তি হৃদয়ের লুকানাে সকল গুণকে শক্তিশালী করে।
শিক্ষার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে মানুষ হয়ে ওঠে আত্মশক্তিতে বলীয়ান। তাই শিক্ষার উদ্দেশ্য সনদ অর্জন করে চাকরি করে। বিলাসী জীবনযাপন নয়। নিজেকে জানা, বােঝা, আবিষ্কার করা ও শক্তিশালী করাই শিক্ষার উদ্দেশ্য।
সমুদ্র দর্শন
মূর্খ মিত্রের চেয়ে শিক্ষিত শত্ৰু ভাল ।
সমাজে বসবাস করতে হলে মানুষকে একে অপরের সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয় এবং সমাজে শত্রু-মিত্র উভয়ের সাথেই কোন না কোনভাবে মেলামেশা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় সেটি হল শিক্ষা। মানুষের বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার মানদণ্ডটি অতীব জরুরি। কেননা, অশিক্ষিত বন্ধুর যত আন্তরিকতাই থাক না কেন, সে যে কোন মুহূর্তে নিজের অজ্ঞতাবশত অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বলা হয়, মূর্খ ব্যক্তি পশুর সমান। ভালোমন্দ বিচার করার যথাযথ ক্ষমতা তার নেই। অনেক সময় বন্ধুর ভালোর জন্য কিছু করলেও তার অজ্ঞতার কারণে তা বন্ধুর ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। এজন্য তাকে দোষও দেওয়া যায় না। অন্যদিকে, শত্রুকে আমরা সাধারণত অনিষ্টের কারণ হিসেবেই বিবেচনা করি। কিন্তু তুলনামূলক বিচারে দেখা যায়, একজন মুর্খ বন্ধু অজ্ঞতাবশত যা করতে পারে, একজন শিক্ষিত শত্রু সজ্ঞানে তেমনটি করতে পারে না। জ্ঞানের নির্মল পরশ অন্তত তাকে এ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারে। যদি অনিষ্ট সে করে তবে সেটা হবে তার দুরাচার। আর মানুষ সব সময়ই শত্রুর দুরাচার সম্পর্কে সজাগ থাকে। ফলে শত্রুর এ চেষ্টা সফল নাও হতে পারে। কিন্তু বন্ধুর ব্যাপারে কোন সন্দেহ না থাকায় মানুষ এতটা সতর্ক থাকে না। অথচ এ অসতর্কতার ফাঁকে মূর্খ বন্ধুর অজ্ঞতাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাই বন্ধু নির্বাচনে জ্ঞান, প্রজ্ঞা আর শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা, জ্ঞান আলো এবং মূর্খতা অন্ধকারের সমতুল্য। আলোতে অনেক বিপদেও নিরাপদ থাকা যায়, অন্যদিকে অন্ধকারে সর্বদাই বিপদের আশঙ্কা থাকে
ভাবের ললিত ক্রোড়ে না রাখি নিলীন, কর্মক্ষেত্রে করি দাও সক্ষম স্বাধীন।
এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "যতদিন ছিলে" কবিতার একটি অংশ।
এই উদ্ধৃতিটি একটি গভীর জীবনদর্শনের প্রতিফলন। এখানে 'ভাবের ললিত ক্রোড়ে না রাখি নিলীন' বলতে বোঝানো হচ্ছে যে, ব্যক্তিগত চিন্তা, অনুভূতি বা ভাবনাগুলোকে শুধুমাত্র মনস্তাত্ত্বিক বা আবেগগতভাবে না রেখে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে। 'নিলীন' শব্দের মাধ্যমে এখানে অভ্যন্তরীণ চিন্তা বা অনুভূতির গভীরতা প্রকাশ করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র অন্তরেও লুকিয়ে থাকলে চলবে না। অন্যদিকে, 'কর্মক্ষেত্রে করি দাও সক্ষম স্বাধীন' বাক্যে বলা হচ্ছে যে, আমাদের দক্ষতা, কর্মক্ষমতা ও স্বাধীনতা কার্যক্ষেত্রে প্রয়োগ করা উচিত। কর্মক্ষেত্রে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং যে কাজ করতে পারি, তা যেন আমাদের স্বাধীনতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে হয়। এখানে স্বাধীনতার সাথে সক্ষমতার সম্মিলন প্রস্ফুটিত হচ্ছে, যেখানে ব্যক্তি নিজের দক্ষতা অনুযায়ী স্বাধীনভাবে কাজ করার স্বাধীনতা পায়। সংক্ষেপে, এই উদ্ধৃতিটি আমাদেরকে উৎসাহিত করে যে, আমাদের অভ্যন্তরীণ ভাবনা বা চিন্তাকে শুধু মনে সীমাবদ্ধ না রেখে, বাস্তব জীবনের কাজে লাগিয়ে কার্যকরীভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্রে নিজের সক্ষমতা ও স্বাধীনতা প্রমাণ করতে হবে।
আমরা সবসময় ভাবের গহনায়, অনুভূতির গভীরতায় হারিয়ে থাকি, যেখানে কোনো এক নিস্তব্ধতা বা মাধুর্য লুকিয়ে থাকে। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে, বাস্তব জীবনে সেই ভাবনার পরিবর্তে আমাদের প্রমাণিত করতে হয় আমাদের ক্ষমতা এবং স্বাধীনতার। সেখানে ভাবের বন্দি হয়ে থাকার সুযোগ নেই। আমরা যদি শুধু ভাবনায় নিমজ্জিত থাকি, তবে বাস্তবতার চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারব না।
এখানে "ভাবের ললিত ক্রোড়ে" বলতে বোঝানো হচ্ছে যে আমরা আমাদের ভাবনাগুলোকে এতটাই গুরুত্ব দিই যে সেগুলো আমাদের কর্মক্ষমতা বা স্বাধীনতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু বাস্তবিকভাবে আমাদের শক্তি এবং স্বাধীনতা আমাদের কাজের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। আমাদের উচিত আমাদের ভাবনার সাথে সাথে কর্মক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে কাজ করা, যাতে আমাদের সক্ষমতা এবং স্বাধীনতা স্বতন্ত্রভাবে প্রকাশ পায়।
এইভাবে, কবি আমাদের শেখাতে চাইছেন যে ভাবনা ও কর্মের মধ্যে সমন্বয় প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। ভাবনার সৌন্দর্য বা গভীরতা তার স্থানেই মূল্যবান, কিন্তু কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা ও স্বাধীনতার প্রয়োগই আসল বিষয়।
তরুণদের উচিত তাদের অমূল্য জীবনকে সার্থক করার জন্য তাদের অনন্ত শক্তিকে কাজে লাগানো।পূর্বপুরুষদের লিখিত পুঁথি ঘেঁটে বসে না থেকে বরং বর্তমানের নতুন পরিবেষ্টনের সাথে খাপ খাওয়ানো ।তাদের বর্তমানের বেদনাকে উপেক্ষা করে ভবিষ্যতের জন্য আদর্শ স্থাপন করার চেষ্টা করা উচিত।অতীতের প্রতি আসক্তি মানুষকে অন্ধ করে দেয়, বর্তমানের পরিস্থিতি বুঝতে বাধা দেয়, ফলে দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ, বিগ্রহ-বিপ্লব এবং রক্ত-বন্যার মতো ঘটনা ঘটে।মানুষের উচিত অতীতের সৃষ্টিকে অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা না করে বর্তমানের নব পরিবেষ্টনের সাথে খাপ খাওয়ানো।তরুণদের চিরকালই অন্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে।
এ কালের দৃশ্যটি অত্যন্ত মন্দ এবং চিন্তামূলক। সমাজের প্রতিনিধিত্ব করা উচিত পরিস্থিতির মধ্যে পর্যায়ক্রমে হেঁটে যাচ্ছে অস্ত্রোচ্চারণ, অন্ধ প্রতিদ্বন্দ্বীতা, স্বতন্ত্রতার অভাব, এবং নৈতিক মূল্যবোধের হারানো অবস্থা। এ দৃশ্যে অনুভব হচ্ছে ক্রুরতা, অসহ্য প্রহরণ, এবং অমানুষিক ব্যবহারের উত্কৃষ্ট উদাহরণ। প্রত্যাশা ও নিরাপদতা এ সময়ে অস্তিত্বে নেই। এই সময়ে সতর্কতা ও শান্তিপূর্ণতা অত্যন্ত প্রয়োজন।
তিনি সানন্দিত চিত্তে সম্মতি দিলেন।
তিনি সানন্দ/আনন্দিত চিত্তে সম্মতি দিলেন।
লেখাপড়ায় তার মনােযােগ নেই।
লেখাপড়ায় তার মনোযোগ নেই
= লেখাপড়ায় তার মনোযোগ নেয়।
তার দেহ আপাদমস্তক পর্যন্ত আবৃত ছিল।
তার দেহ আপাদমস্তক আবৃত ছিল।
তার মত ত্বরিতকর্মী লােক আর হয় না।
তার মত ত্বরিতকর্মী লােক আর হয় না। = তার মত ত্বরিতকর্মী লোক আর নেই।
সে দলের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠতম খেলােয়াড়।
সে দলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ খেলােয়াড়= সে দলের সেরা খেলোয়াড় /সে দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।
বিবাদমান দুটি দলে সংঘর্ষ হয়।
বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
অন্যান্য বিকল্প:
হিমালয় পর্বত দুর্লংঘনীয়।
হিমালয় পর্বত দুর্লংঘনীয়। = হিমালয় পর্বতমালা অতিক্রম করা অত্যন্ত দুঃসাধ্য।
তিনি এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি।
তিনি এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি। = তিনি সমাজে একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি।
সে ভিড়ে অন্যান্যদের মধ্যে হারিয়ে গেল।
সে ভিড়ে অন্যান্যদের মধ্যে হারিয়ে গেল। = সে ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল।
তুমি সেখানে গেলে অপমান হবে।
তুমি সেখানে গেলে অপমান হবে। = তুমি সেখানে গেলে অপমানিত হবে।
সর্ববিষয়ে বাহুল্যতা বর্জন কর উচিত।
সর্ববিষয়ে বাহুল্যতা বর্জন কর উচিত। = সকল বিষয়ে বাহুল্য বর্জন করা উচিত।
মুমূর্ষ ব্যক্তির সেবা করবে।
মুমূর্ষ ব্যক্তির সেবা করবে। = মুমূর্ষু ব্যক্তির সেবা করবে।
অন্যায়ের প্রতিফল দুর্নিবার্য।
অন্যায়ের প্রতিফল দুর্নিবার্য। = অন্যায়ের পরিণাম অনিবার্য/অন্যায়ের ফল অনিবার্য
মিথ্যা একদিন না একদিন প্রমাণ হয়।
মিথ্যা একদিন না একদিন প্রমাণ হয়। = মিথ্যা একদিন না একদিন প্রকাশ হয়।
নতুন – হবে নবান্ন।
লােভে – পড়ে জীবনটা মাটি করাে না।
শরতে – ধরাতল ঝলমল ।
গরিবের – রােগ ভাল নয়।
ওর বয়সের – নেই।
তিনি – শ্রেষ্ঠ।
এই তাে – চলার পথ
রবে বনভূমি - মুখরিত হয়।
তার মত – খাের আর দেখি নি।
শীতকালে – পাখিরা ভিড় জমায়।
তার সাধ আছে – নেই।
তার এখন – দশা চলছে।
হারানাে ছেলে ফিরে পেয়ে মা যেন – চাঁদ হাতে পেলেন।
মাছের মার কান্না।
মাছের মায়ের কান্না বাগধারার অর্থ মিথ্যাশোক।
বাক্য: খেলার সময় একটু আঘাত পেয়েই সে মাছের মার কান্না করছে।
কান পাতলা।
কান পাতলা অর্থ যে সব বিশ্বাস করে
>সে একজন কান পাতলা মানুষ তাকে সব কথা বলতে নেই।
কলির সন্ধ্যা ।
কলির সন্ধ্যা বাগধারাটির অর্থ দুর্দিন বা দুঃখের সূত্রপাত।
বাক্য: চাকরি চলে যাওয়ায় তার জীবনে কলির সন্ধ্যা নেমে এসেছে।
লম্বা দেওয়া।
চম্পট দেওয়া
সােনায় সােহাগা।
সোনায় সোহাগা
অর্থ: উপযুক্ত মিলন
বাক্য: তার সুন্দর চোখ আবার মিষ্টি হাসি যেন সোনায় সোহাগা।
মিছরির ছুরি।
মিছরির ছুরি বাগধারাটির অর্থ হল মুখে মধু অন্তরে বিষ।
বাক্য: সে মিছরির ছুরি দিয়ে অনেকের সাথে প্রতারণা করেছে।
মাকাল ফল।
মাকাল ফল বাগধারাটির অর্থ হল অন্তঃসারশূন্য।
বাক্য: তাকে দেখতে সুন্দর মনে হলেও আসলে সে মাকাল ফল
জিলাপির প্যাঁচ
জিলিপির প্যাঁচ বাগধারাটির অর্থ হলো কুটিল বুদ্ধি।
বাক্য: যার পেটে এমন জিলাপীর প্যাঁচ, তাকে সব কথা বলা উচিত হয়নি।
তীর্থের কাক
'তীর্থের কাক' বাগধারার অর্থ প্রতীক্ষাকারী।
বাক্য: তীর্থের কাকের মতো তোমার অপেক্ষায় দু ঘন্টা যাবৎ বসে আছি।
তুলকালাম কাণ্ড।
তুলকালাম কান্ড বাগাধারার অর্থ তুমুল ঝগড়া বা প্রচণ্ড গোলমাল
বাক্য: সে সামান্য বিষয় নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড বাধিয়ে দিয়েছে।
যা অবশ্যই ঘটবে।
দিবসের পূর্বভাগ
যে ভূমিতে ফসল জন্মায় না
যিনি সব জানেন
যিনি সব জানেন-সবজান্তা
যিনি কম কথা বলেন
দেখিবার ইচ্ছা
যার নিজের বলতে কিছুই নেই।
অনুসন্ধান করতে ইচ্ছুক
যার কোথাও ভয় নেই।
যা নষ্ট হয়।
কাপা কে ছিলেন?
বাংলা ভাষায় পূর্ববর্তী স্তরের নাম কী?
বড় দাসের কাব্যের নাম কী?
দৌলত উজির বাহরাম খানের কাব্যের নাম কী?
'ইউসুফ-জোলেখা’ কাব্যের রচয়িতা কে ছিলেন?
আলাওলের শ্রেষ্ঠ কাব্যের নাম কী?
লালন শাহ কী রচনা করেন?
মধুসূদন দত্তের মহাকাব্যের নাম কী?
রবীন্দ্রনাথের 'বলাকা' কাব্যের প্রথম প্রকাশ কোন সালে?
কাজী নজরুল ইসলামের 'বিদ্রোহী' কবিতা কোন কাব্যের অন্তর্গত?
'ধূসর পাণ্ডুলিপি' কার রচনা?
'লালসালু'র লেখক কে?
জহির রায়হানের জনপ্রিয় উপন্যাস কোনটি?
Freedom of expression.
Theatre in Bangladesh.
A fictional character I greatly admire.
Non-formal education.
The right to strike.
Problems and prospects of working women in Bangladesh.
Foreign aid.
Power tends to corrupt, and absolute power corrupts absolutely.
Blessed is he who considerate the poor.
Time is the great physician.
It is an independent newspaper.
The United Nations have a tremendous job before it.
When a boy or a girl enters college, they find it very different from high school.
Guard against misspellings.
Last year the people began to realise how much she has contributed.
The affect of the storm was evastating.
By the evening the auditorium was allready full.
He agreed with his friend's plan.
The current of identical sounds help to awaken the emotions.
Employ whomever is willing to work.
The worker has a reasonable, secure future.
The current was swift, but he could not swim to shore.
I was truly sorry for my rude behaviour.
Taking our seats the game started.
Have you time to listen – my story?