বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছিল ১৯৯০ সালের দিকে। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে ব্যাংকিং খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে। এরপর থেকে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে তথ্য প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার যেন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। তাই এখনকার যুগে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া আমাদের সমগ্র ব্যাংকিং ব্যবস্থার কথা চিন্তাও করা যায় না। ডিজিটাল বাংলাদেশ ও রূপকল্প ২০২১ এর যে স্বপ্ন আমরা লালন করি তার-ই উজ্জ্বলতম প্রকাশ এই ব্যাংকিংখাত। এই খাতে যাবতীয় অর্থের লেনদেন, হিসাব-নিকাশ, Money transfer সহ সমস্থ কাজেই এই ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। তাই বলা যায় যে এক মুহূর্তের জন্যও যদি ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অনাকঙ্ক্ষিত কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি ঘটে তবে সমগ্র ব্যাংকিং ব্যবস্থায় যে কত বড় দুর্ঘটনা ঘটবে তা কল্পনাতেও আনা যায় না। যেমন কোন ব্যাংক যেটা সরকারি-বেসরকারি কিংবা ইসলামী ব্যাংক যাই হোক না কেন দুর্নীতি, বিপুল ঋণখেলাপী কিংবা বড় কোনো অব্যবস্থাপনার সম্মুখীন হলে তা হয়তো কোনোভাবে কাটিয়ে উঠা সম্ভব কিন্তু কোনো কারণে যদি ব্যাংকটির কেন্দ্রীয় সার্ভারটি Collapse হয়ে যায় তাহলে সেই কি ব্যাংকটির পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব নয়।
আমাদের দেশে যে Traditional banking system চালু ছিল এই তথ্য প্রযুক্তির কারণে সেই প্রথাগত বা Traditional banking system কে অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধার মধ্যে আনা সম্ভব হয়েছে। সেই স্থানটি এখন দখল করে নিয়েছে অনলাইন ভিত্তিক ব্যাংকিং সেবা। সেই সাথে ব্যাংকিং খাতের সেবার পরিধিও ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে। এটি একদিকে যেমন সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতে কর্মদক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে, সেই সাথে এটি ব্যাংকিংখাতের মুনাফাকেও বাড়িয়ে দিয়েছে । গ্রাহকদের লেনদেন নির্ভুলভাবে সংঘটিত হচ্ছে, তাই গ্রাহকদের সন্তুষ্টিও বাড়ছে।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে এখন বছরে গড়ে ১৭০ কোটি বার লেনদেন হচ্ছে যা প্রথাগত লেনদেন। আর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে অনলাইনে ২০০ কোটি বারের বেশি লেনদেন হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন ব্যাংকার বছরে গড়ে ১০ হাজার Transaction করছেন। ২০০০ সালের আগ পর্যন্ত এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৫,০০০, অর্থাৎ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে গড় দেড় দশকে ব্যাংকারদের কর্মদক্ষতা (Efficiency) দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। BIBM (Bangladesh Institute of Bank Management) কর্তৃক পরিচালিত সম্প্রতি এক গবেষণা হতে জানা যায় যে, তথ্য প্রযুক্তিখাতে মাত্র এক টাকা বিনিয়োগ করলে ব্যাংকের জন্য তা ১৩৬ টাকার সমান উৎপাদনশীলতা (Productivity) তৈরী করে। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তি ব্যতীত অন্য খাতে এই এক টাকা বিনিয়োগ করলে তা ৫৮ টাকার সমান উৎপাদনশীল নিয়ে আসে।
বর্তমানে Online ভিত্তিক ব্যাংকিং সেবার বিকাশ, রকেট কিংবা এজেন্ট ব্যাংকিং এর দ্রুত বিকাশ এবং জনপ্রিয়তার একমাত্র কারণে এই সকল পরিসেবায় তথ্য প্রযুক্তির নিপুণ ব্যবহার। এখন বাস্তবতার কারণে অধিকাংশ মানুষ এখন Online ব্যাংকিং এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। পূর্বে ব্যাংকের জটিল হিসাব নিকাশ করতে যেখানে দিনের পর দিন সময় চলে যেত, এখন তা মুহূর্তের মধ্যেই অনেক সহজে করা সম্ভব হচ্ছে। বিভিন্ন Software company গুলোর তৈরীকৃত আধুনিক Software গুলো দ্বারা পুরো ব্যাংক শিল্প পরিচালিত হচ্ছে। এই কারণে এখন ব্যাংকের ভুলের পরিমাণ পূর্বের পরিমাণ পূর্বের তুলনায় এখন অনেক কমে গিয়েছে।
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে আমাদের ব্যাংকিং খাত তথা অর্থনীতি যেমন সমৃদ্ধ হচ্ছে, তেমনি সাম্প্রতি সময়ে ব্যাংকিং খাতে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা খুবই ঝুঁকির আভাস দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনাটি প্রণিধানযোগ্য। এছাড়া ATM card জালিয়াতি, Mobile Banking এর মাধ্যমে জঙ্গি অর্থায়ন ইত্যাদি ঘটনাগুলোকে ব্যাংকিং খাতের Cyber threat হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। তাই এইসব ঘটনাবলী এড়ানোর জন্য ব্যাংকগুলো Server গুলোকে আরো শক্তিশালী করতে হবে এবং IT specialist দের পরামর্শ আসলে নিতে হবে। এছাড়া Online money transfer কার্যক্রমে নিবিড় তদারকির জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ ও সতর্কতা বাড়াতে হবে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধের জন্য সম্বনিত পদক্ষেপ নিতে হবে । তাহলেই আমরা ব্যাংকিং খাতে তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণের ফল ঘরে তুলতে পারব ।
তারিখঃ ২২/০৯/২০১৮
মেয়র
মানিকগঞ্জ পৌরসভা
বিষয়ঃ মানিকগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্গত শেওতা এলাকার জলাবদ্ধতার প্রতিকার চেয়ে আবেদন ।
জনাব,
মানিকগঞ্জ পৌরসভার ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকা শেওতা দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত। পানি নিষ্কাশনের পথগুলো বন্ধ হওয়ার দরুন সামান্য বৃষ্টিতেই পথ-ঘাট ডুবে যায়। চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে আর জনজীবন হয়ে উঠে অতিষ্ঠ। এই জলাবদ্ধতা ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ড্রেনেজ সিস্টেম অকার্যকর হওয়ার দরুন ড্রেনের সকল ময়লা আবর্জনা নগরের প্রতিটি শহরেই ছড়িয়ে পড়ছে আর নগরী দূষণের কবলে পড়ছে। ময়লা পানিতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাজেই নগরে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। এছাড়া পানি ও বায়ু দূষণের ফলে ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ নানা ধরনের রোগের বিস্তার ঘটছে। পঁচা পানি, কচুরিপানা আর আবর্জনায় ভরপুর এইসব জলাশয় থেকে প্রতিনিয়তই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এটার কারণে শিশু বৃদ্ধসহ সকল শ্রেণির লোকেরই চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বারবার প্রতিকার চেয়ে আবেদন করা সত্ত্বেও এই জলাবদ্ধতা নিরসনে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে সমস্যাটির আকার ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাজেই জলাবদ্ধতার আশু প্রতিকার দরকার ।
এমতাবস্থায়, আপনার নিকট আকুল আবেদন এই যে, অনতিবিলম্বে জলাবদ্ধতার প্রতিকারের ব্যবস্থা করে এলাকাবাসীর দুঃখ- দুর্দশা লাঘবে আপনার সদয় অনুভূতির স্বাক্ষর রাখবেন ।
নিবেদক
এলাকাবাসীর পক্ষে
শিমুল
মানিকগঞ্জ পৌর এলাকা, মানিকগঞ্জ ।