Global Islami Bank Ltd. || Probationary Officer (20-02-2021) || 2021

All

                                                                                                      'ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নে ব্যাংকের ভূমিকা'

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শিল্প খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্ন দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের বিকাশ শিল্পোন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে। সর দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও দারিদ্র্যদূরীকরণের হাতিয়ার হিসেবে এসএমই স্বীকৃতি দিয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে এসএমই আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। বৃহৎ শিল্পের তুলনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কম পুঁজিনির্ভর।

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে অর্থনীতির প্রাণ কৃষি হলেও দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কষির পাশাপাশি শিল্প খাতের উন্নয়ন অনস্বীকার্য। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে বাংলাদেশ শিল্পোন্নয়নের অভিযাত্রায় অনেকদূর এগিয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আবাদি জমির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে এবং যাচ্ছে। ১৭ কোটি মানুষের দেশের শিল্পোন্নয়নের বিশেষ করে এসএমই খাতের উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। কারণ কৃষি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়লেও জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও জমির অপরিকল্পিত ব্যবহারের ফলে কৃষি খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে শিল্প খাতে বিনিয়োগ, উৎপাদন, আয়বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের রয়েছে অফুরন্ত সম্ভাবনা। 

একটি উন্নয়নশীল দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। এমনকি সমৃদ্ধিশালী দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও এ খাতের অবদান রয়েছে। খাতটি শ্রমঘন। এর উৎপাদন সময় তুলনামূলকভাবে স্বল্প। ফলে জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, আয়বৈষম্য কমিয়ে আনা, দারিদ্র্য বিমোচন প্রভৃতি লক্ষ্য অর্জনে এসএমই খাতের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে পারে। এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যাংকের কয়েকটি পদক্ষেপ দেখে নিতে পারেন। 

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ ও সম্প্রসারণে ব্যাংক আন্তরিক। এজন্য বেশ কয়েকটি স্কিম ও কর্মসূচি নিয়েছে। আইডিএ ও এডিবি তহবিল থেকে সুলভে পুনঃঅর্থায়ন স্কিমে অর্থায়ন করছে ব্যাংক। সহজ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সুবিধা নিশ্চিতকরণে কাজ করছে। এজন্য ব্যাংকগুলোয় এসএমই খাতের জন্য 'ডেডিকেটেড ডেস্ক চালু করা হয়েছে। এসএমই সার্ভিস সেন্টার খোলা হয়েছে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রবর্তনের পাশাপাশি বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ‘এসএমই ও স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ' নামে একটি বিভাগ রয়েছে। বিভাগটি এসএমই খাতের উন্নয়নে নীতিনির্ধারণ, মনিটরিং ও তহবিল সরবরাহ করবে। উদ্যোক্তা গঠন ও উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যাংক যে কর্মসূচি অনুসরণের মাত্রা নির্ধারণ করেছেঃ 

  • এসএমই খাতকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম এজেন্ডা বিবেচনা করে ব্যাংক । 
  • ২০১০ সালে গৃহীত এসএমই ঋণ বিতরণের নির্দেশিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ক্ষুদ্র, মাঝারি ও নারী উদ্যোক্তা ভিত্তিক এসএমই ঋণ বিতরণ করতে হবে। 
  • ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নির্দেশিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সচেষ্ট থাকবে। 
  • ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ খাতে অর্থায়নে ভিন্ন ব্যবসায়িক কৌশল অবলম্বন করবে। ঋণদান প্রক্রিয়া দ্রুত ও সহজীকরণ করবে। 
  • মাঝারি শিল্পের চেয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে। 
  • শিল্প উন্নয়নে নারী উদ্যোক্তাদের অংশ নেওয়া বাড়াতে হবে। তাদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য সহজে ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। ঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার দিতে হবে।  
  • নারী শিল্প উদ্যোক্তাদের সব ধরনের ঋণ আবেদনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। আবেদনের সময় থেকে একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানকে নিষ্পত্তি করতে হবে। 
  • সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অবশ্যই স্বতন্ত্র 'ওমেন এন্ট্রাপ্রেনিয়র' ও 'ডেডিকেটেড ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। এজন্য উপযুক্ত জনবল নিয়োগ দিতে হবে। তাদের এসএমই খাতের অর্থায়নে সহায়ক ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এ ডেস্কে সম্ভব হলে নারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। 
  • এসএমই খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সফলতাকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের নতুন শাখা খোলার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মাপকাঠি হিসেবে গণ্য করা হবে। 
  • উদ্যোক্তাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।