'অগ্র পশ্চাৎ বিবেচনা না করে যে কাজ করে’ বাক্যটি এক কথায় প্রকাশ করুন?
অবিমৃষ্যকারী।
'গৌরীসেনের টাকা’ বাগধারাটির অর্থ লিখুন।
অফুরন্ত অর্থ।
'বিদ্বান’ শব্দের লিঙ্গ পরিবর্তন করুন।
বিদুষী।
‘অনুরক্ত’ শব্দের বিপরীত শব্দ লিখুন।
বিরক্ত।
‘সেচ্ছা’ শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ করুন।
স্ব + ইচ্ছা।
মনুষ্য জীবন সার্থকতা পায় মনুষ্যত্ব অর্জনের সাধনায় সফলতা অর্জনের মাধ্যমে। মানবিক গুণাবলি মানুষের সহজাত অর্জন নয়। শিক্ষা ও সাধনার মাধ্যমে বিবেক, বুদ্ধি ও মনন শক্তি অর্জন করে মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। পৃথিবীতে তরুলতা ও পশুপাখির মতো মানুষও এটার সৃষ্টি। কিন্তু প্রকৃতির অন্যান্য সৃষ্টির চেয়ে বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে মানুষ একেবারে আলাদা। জন্মসূত্রে তরুলতা ও পপাখি সহজাত বৈশিষ্ট্য পায়। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাদের স্বভাব, প্রকৃতি প্রদত্ত গুণাবলী ও প্রকৃতিনির্ভর বৈশিষ্ট্য অব্যাহত থাকে। কিন্তু জন্মগত সহজাত বৈশিষ্ট্যে মানুষের পরিচয় বা কাজ নয়। মানুষ অসহায় অবস্থার জন্য নিয়েও নিজ প্রচেষ্টা, সাধনা, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে হয়ে ওঠে পরিপূর্ণ মানুষ। এজন্য সামাজিক জীব হিসেবে মানুষকে সমাজ জীবন থেকেও শিক্ষা নিতে হয়। এভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে মানুষ গড়ে তুলেছে নিজস্ব সভ্যতা এবং জগৎ বিকাশের নিয়মনীতিগুলো আয়ও করে সৃষ্টি জগতে বিস্তার করেছে নিজ আধিপত্য। মানুষ এই ক্ষমতা একদিনে অর্জন করেনি কিংবা জন্মসূত্রেও সেই অভিজ্ঞতা কেউ লাভ করেনি। এজন্য তাকে অনেক চেষ্টায় নানা রকম বিদ্যা বা শিক্ষা অর্জন করতে হয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা করতে হয়, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা দিক রপ্ত করতে হয়। তাই মানুষ হয়ে ওঠার জন্য চাই নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা ও সাধনা। বিশ্বজগতের সমস্ত সৃষ্টির সাথে এখানেই মানুষের পার্থক্য ও স্বাতন্ত্র্য্য ।
বর্তমান বিশ্বসভ্যতা যে কয়টি মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন, মাদকাসক্তি তার মধ্যে অন্যতম। মাদকের ভয়াবহ ছোবলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যুবসমাজ। বিঘ্নিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন। মাদকদ্রব্য হচ্ছে সেসব বস্তু যা গ্রহণের ফলে স্নায়ুবিক বৈকল্যসহ নেশার সৃষ্টি হয়। সুনির্দিষ্ট সময় পর পর তা সেবনের দুর্বিনীত আসক্তি অনুভূত হয় এবং কেবল সেবন দ্বারাই সে তীব্র আসক্তি (সাময়িক) দূরীভূত হয়। এর কুপ্রভাব ও ভয়াবহতা মারাত্মক। বাংলাদেশে যেসব মাদকদ্রব্যের সেবন সর্বাধিক সেগুলো হলো গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, রেকটিফাইড স্পিরিট, মদ, বিয়ার, তাড়ি, পঁচুই, ঘুমের ওষুধ, প্যাথেড্রিন ইনজেকশন ইত্যাদি। এসব মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে নেশা সৃষ্টিকে মাদকাসক্তি বলা হয়। যেসব পরিবারে পারিবারিক বন্ধন শিথিল, মা-বাবা, ভাই-বোনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা কম, সেসব পরিবারের সদস্যরাই মাদকাসক হয়ে থাকে। বাংলাদেশে অধিকাংশ মাদকাসক্তের গড় বয়স ১৮-৩২ বছর। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। কারণ, এ সময়টিই জীবনের সোনালি সময়। এ সময়ই মানুষ পরিবার, দেশ জাতি তথা বিশ্বের জন্য বেশি শ্রম দেয়। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার এবং চোরাচালানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক প্রসার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। অকালে ঝরে যাচ্ছে বহু তাজা প্রাণ। মাদকের নিষ্ঠুর ছোবলে এবং অংকুরেই বিনষ্ট হচ্ছে বহু তরুণের সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। মাদকদ্রব্য তরুণ সমাজের এক বিরাট অংশকে অকর্মণ্য ও অচেতন করে তুলেছে। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার অবক্ষয় ঘটাচ্ছে মূল্যবোধের। ফলে সুস্থ সামাজিক বিকাশ, সুন্দর পরিবেশ ও ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক ও জাতীয় জীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের যুবসমাজকে ও মাংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য মাদকাসক্তি নিরাময় ও প্রতিরোধ আন্দোলনে সকলকে আসতে হবে। এর পূর্বশর্ত হিসেবে ধুমপান ও মাদকবিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। সরকারি মহল থেকে করে গণমাধ্যম, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, সমাজকর্মী, সমাজবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদসহ সকল শ্রেনী মানুষের সক্রিয় অংশ গড়ে তুলে এ বিশ্বকে সবার বাস উপযোগী করে তুলতে হবে।