২৪-০১-২০২০
বরাবর
মহাপরিচালক
খাদ্য অধিদপ্তর
ঢাকা-১২৫০
বিষয়ঃ খাদ্যে ভেজালের কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ ।
জনাব,
মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে প্রধান হলো খাদ্য। সুস্থ, সবল আর স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ যে খাৰৰ যায়, তা ভেজালবিহীন হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ দিনের পর দিন ভেজাল খাদ্য খেয়ে জটিল মারাত্মক সব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
দেশজুড়ে খাদ্যে ভেজালের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায় যে নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়, ভেজালবিরোধ আন্দোলনের অপর্যাপ্ততা এবং ক্রেতা-অধিকার সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অজ্ঞতাই মূলত খাদ্যে ভেজালের কারণ। ফরমালিন, ক্যালসিয়াম কার্বাইডসহ বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে মাছ-মাংস, ফলমূল, শাকসবজি ও তরিতরকারি সজীব খ সতেজ রাখা হয়, যা ওই সব খাদ্যদ্রব্যকে মারাত্মকভাবে বিষাক্ত করে। আর এসব কেমিক্যাল মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণ করে মানুষের কিডনি ও লিভার নষ্ট হচ্ছে, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছে ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিতে। বেশির ভাগ হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও খাবারের দোকানে খাবারের মান খুবই খারাপ ও ভেজালযুক্ত। মোটকথা, আমাদের দেশে চলছে ভেজাল খাদ্যের মহোৎসব। যদি এ অবস্থা চলতে থাকে, তবে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা ভারতেই শরীর শিউরে ওঠে। অচিরেই যদি এ অবস্থার নিরসন করা না যায়, তবে এর চিত্র যে কত ভয়াবহ হবে, তা কল্পনাতীত।
বাংলাদেশে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধের জন্য যে কোনো আইন প্রণয়ন হয়নি, তা নয়। বিশুদ্ধ খাদ্য বিল ২০০৫' নামে একটি আইন করা হয়েছে, যাতে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা জরিমানা ও তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু দেশে খাদ্যে ভেজালের চিত্র যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, সেখানে এই আইন পর্যাপ্ত নয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে শিয়ালের মাংস, হোটেলে মরা মুরগির মাংস খাইয়ে ধরা পড়েও অপরাধী পার পেয়ে যায়, আর আমরা যে তিমিরে আছি, সে তিমিরেই রয়ে গেছি। আসলে উন্নত দেশগুলোতে ক্রেতারা যে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, তা আমাদের দেশে স্বপ্নের মতো মনে হয়।
অতএব আপনার নিকট আকুল আবেদন এই যে, খাদ্যে ভেজালের যথাযথ কারণ চিহ্নিত পূর্বক সকল খাদ্যের ভেজাল নিরাসনকল্পে আপনার একান্ত মর্জি হয়।
বিনীত নিবেদক
প্রণয় তির্কী
চাটখিল, কুমিল্লা।