১৯৭২ সালের ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কবির বাকি জীবন বাংলাদেশেই কাটে। ১৯৭৬ সালে নজরুলকে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদানের সরকারি আদেশ জারী করা হয় ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কোন গ্রন্থটি কাজী নজরুল ইসলামকে উৎসর্গ করেন?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর 'বসন্ত' (১৯২৩) গীতিনাট্য গ্রন্থটি কাজী নজরুল ইসলামকে উৎসর্গ করেন
“আমার দেখা নয়াচীন” কার রচনা?
“আমার দেখা নয়াচীন” শেখ মুজিবুর রহমানের রচনা।
সদ্য প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপকের নাম কি?
সদ্য প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপকের নাম অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম; অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
“বাঙলার জয় হোক, বাঙালির জয় হোক” কার উক্তি?
“বাঙলার জয় হোক, বাঙালির জয় হোক” কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি।
‘মানুষ' শব্দের প্রকৃতি ও প্রত্যয় হলো ‘মনু + ষ্ণ’। তবে আধুনিক বাংলা অভিধানে আছে ‘মনু + তা’।
'সর্গ' ও স্বর্গ' এর পার্থক্য হলো ‘সর্গ' অর্থ ‘জন্ম বা সৃষ্টি’ আর ‘স্বর্গ' অর্থ 'জান্নাত; বেহেশত'।
‘জীবনানন্দ' ও ‘প্রশ্নোত্তর' এর সন্ধি বিচ্ছেদ হলো ‘জীবন + আনন্দ' আর ‘প্রশ্ন + উত্তর'।
‘কর' অর্থ বিশেষ্য অর্থে 'হাত বা হস্ত' এবং ‘কর' অর্থ ‘কিরণ; প্রভা’ ।
দ্বিগু সমাসের দু'টি উদাহরণ হলো- দু' আনার সমাহার = দু’আনি। শত অব্দের সমাহার = শতাব্দী ।
“মহাকালের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু”
পরাধীন, অবহেলিত ও নিষ্পেষিত এই জাতিকে শতাব্দীর মহানায়ক স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছিলেন। বাঙালির হাজার বছরের স্বাধীনতার স্বপ্নকে যিনি বাস্তবায়িত করেছিলেন, যিনি এই স্বাধীনতার স্বাদ বাঙালিদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, তিনি মহাকালের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সাধারণ মানুষ নন। তিনি এক মহানায়ক। মহানায়কের জন্ম একটি জাতিতে বারবার হয় না। মহানায়ক কখনও একাধিক হয় না। মহানায়কের কোনো তুলনা হয় না। পৃথিবীর ইতিহাসে এক একটি জাতির জন্য এক একজন মহানায়কের জন্ম হয়েছিল। বাঙালি জাতির জন্যও বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল। বাঙালির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আজও বাঙালি পরাধীনতার বেড়াজাল থেকে মুক্ত হতে পারত না। এ দেশের দুঃখী-দরিদ্র মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধুর নিরন্তর, নিরলস সংগ্রাম এবং দাবি আদায়ে দীর্ঘ কারাবাসের মুখে দৃঢ় মনোবল তাঁকে করে তুলেছিল জীবন্ত কিংবদন্তি । সেই কিংবদন্তির জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। একজন মহান, ত্যাগী নেতা তাঁর দেশের মানুষকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেন, অপরিসীম সাহসিকতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, সঠিক ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিঁড়ে ছিনিয়ে আনতে পারেন, তার উজ্জ্বল উদাহরণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সাহিত্যিক ও ছড়াকার অন্নদাশঙ্কর রায় বঙ্গবন্ধুর কীর্তিকে স্মরণ করে ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর লিখেছিলেন কালজয়ী পক্তি- 'যতকাল রবে পদ্মা যমুনা/ গৌরী মেঘনা বহমান/ ততকাল রবে কীর্তি তোমার/ শেখ মুজিবুর রহমান।/ দিকে দিকে আজ অশ্রুগঙ্গা/ রক্তগঙ্গা বহমান/তবু নাই ভয় হবে হবে জয়/ জয় মুজিবুর রহমান।' বঙ্গবন্ধু হঠাৎ মহানায়কে পরিণত হননি। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে তিনি মহানায়কে পরিণত হয়েছিলেন। কিশোর বয়সেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে তিনি প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। এর পর থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের অভিযাত্রা। তিনি তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ গঠন ও বিস্তারেও তার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগ ও স্বাধীনতা আন্দোলন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৬২ সালে শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে তিনি বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতার পরিণত হন। বঙ্গবন্ধু আসলেই বাংলার সাধারণ মানুষের নাড়ির স্পন্দন বুঝতে পেরেছিলেন। মুসলিম লীগের শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে দুটি বিষয় কাজ করত। একটা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের চিন্তাভাবনা এবং তাদের যে দুঃখ-কষ্ট-দুর্দশা; তা থেকে মুক্ত করার জন্য কর্মসূচি গ্রহণ। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, সাহসিকতা। অর্থাৎ সাহস করে মানুষকে আন্দোলনের পথে নিয়ে আসা। স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হলে যে সাহস ও দৃঢ় মনোবল দরকার, সেটা অর্জন করা। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রনেতা, যুবনেতা এবং তিনিই আওয়ামী লীগের একজন নেতা, যিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে সেই সময়কার অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর। মানুষের কাছেও তিনি দ্রুত পৌছে যেতে পারতেন। স্বাধীনতার অগ্রদূত মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়; একটি ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা। স্বায়ত্তশাসন, স্বাধীনতা ও সংসদীয় গণতন্ত্রের স্বপ্নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা বাংলাদেশকে চূড়ান্ত স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। স্বাধীনতা ঘোষণা, প্রতিরোধ যুদ্ধ, সরকার গঠন, ছোট ছোট যুদ্ধ, বড় বড় যুদ্ধ, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস এবং বর্বর পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মম নির্যাতন, গণহত্যাসহ নানাবিধ ঘটনা নিয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস। আর এই ইতিহাসের প্রতিটি স্তরে বঙ্গবন্ধু একটি শক্তি, একটি চেতনা। তিনি গোটা বাঙালি জাতির জন্য যে উপহার দিয়ে গেছেন, সেই ঋণ কখনও শোধ হবে না ।