মহান মুক্তিযুদ্ধই আমাদের অস্তিত্বের ঠিকানা। আমাদের জীবনে মুক্তিযুদ্ধ শুধুমাত্র একটি শব্দই নয়। মুক্তিযুদ্ধ প্রতিটি বাঙালীর অন্তরের এক অনন্ত বহ্নি শিখার নাম। মুক্তিযুদ্ধ বাঙালীর গৌরব আর গর্ব, বাঙালীর চেতনা, বাঙালীর ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা। বাঙালীর অনুপ্রেরণা, বাঙালীর শানিত হওয়ার অপর নাম। মুক্তিযুদ্ধই আমাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আলোকবর্তিকা হিসেবে গ্রহণ করে। আমাদের জীবনের যাবতীয় প্রাপ্তি, স্বপ্ন-সাধ, পরিকল্পনা সব কিছু হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেন্দ্রিক। কেননা মুক্তিযুদ্ধই আমাদের জাতিসত্তার ভিত্তি, আমাদের বেঁচে থাকার এবং এগিয়ে চলার একমাত্র অবলম্বন ।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্মকে ভীষণভাবে আপ্লুত করে এবং চলার পথে অনুপ্রেরণা জোগায়, তাদের জাতীয়তাবোধ ও আত্মপরিচয় দান করে। তারা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত বই পড়তে পছন্দ করে, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানার জন্য তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায় গভীর আগ্রহ। মুক্তিযুদ্ধ এই প্রজন্মের দেশপ্রেমের এক অনিঃশেষ প্রেরণা ও উৎসের নাম। তরুণ প্রজন্মের ধর্মই হলো নতুনের পানে ছুটে চলা। যে জানতে চায় নিজ জাতিসত্তার পরিচয়; সে যেতে চায় আপন শিকড়ের মূলে। আর এ চলার পথে তাকে উদ্বুদ্ধ করে নিজ জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, লৌকিকত্ব এবং সাংস্কৃতিক চেতনা আর পরিচয়। সে এসে দাঁড়ায় ৭১ এর সামনে; সে জানতে পারে কত ত্যাগ, তিতিক্ষা ও রক্তের বিনিময়ে এ জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেছে। আজকের তরুণ প্রজন্ম গড়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধকালীন ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা, চেতনা ও দেশপ্রেম নিয়ে। এর প্রমাণ পাওয়া যায় একুশের বইমেলা এবং স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে। দেশের আনাচে কানাচে তরুণ প্রজন্মের প্রতিটি সদস্যকে তাদের কপালে ও বুকে-পিঠে জাতীয় পতাকাসহ ও পতাকাশোভিত পোশাক শহীদ মিনার ও বিজয়স্তম্ভে উপস্থিত দেখা যায়। তাদের সুগভীর দেশপ্রেমেরই বহিঃপ্রকাশ। ৭১ এর অনুপ্রেরণা, চেতনা ও দেশপ্রেম আমাদের আছে, থাকবে এবং অনন্তকাল থাকবে।