একমাত্র হান্নান ছাড়া আমাদের সবার কাছেই অস্ত্র ছিল। মাত্র ১৪ বছর বয়স হান্নানের। দেখতেও ছোটখাটো, কিন্তু বেশ শক্তসমর্থ। আমি তাকে একটা ময়লা গেঞ্জি ও একটা হাফ প্যান্ট পরিয়ে ঠিক রাখাল ছেলে মতো করি। স্বাধীনতা সংগ্রামে সেও যে একজন যোদ্ধা তাকে দেখে বিশ্বাস করার উপায় রইলো না। অত্যন্ত নির্ভীক এ দেশ প্রেমিক কিশোর। আমাদের ৩০০/৪০০ গড় সামনে তাকে চলতে বললাম, কারণ তাকে স্কটাউটের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সে সামনে এগিয়ে যেতে যেতে চারদিকে সতর্ক দৃষ্টিতে নজর রাখলো । এক নির্মম শত্রুর সংগে আমাদের লড়াই, তাই সামান্য অসতর্ক হলে্ নিষ্ঠুরতম হত্যার শিকার হতে হবে। সুতরাং হান্নানের কাজ হলো সে খেয়াল রাখবে কোথাও পাঞ্জাবী সৈন্য বা রাজাকাররা ওঁৎ পেতে আছে কিনা । থাকলে সে যেন সাথে সাথে সংকেত দিয়ে আমাদের জানিয়ে দেয়। সে তার সামনে এবং দু’পাশ ভালোমতো দেকে যখন বুঝতে পারে যে সেখানে কোনো শত্রু নেিই, তখন আমাদের এগিয়ে যেতে হাতে ইশারা দেয়। আর আমরা তার ইশারায় অগ্রসর হই। এভাবে ৩ (তিন) ঘণ্টায় আমরা মাত্র দেড় মাইল পথ অতিক্রম করি। কখনো কখনো সে গ্রামবাসী অথবা ছোট ছোট ছেলেকে জিজ্ঞাসা করে সেখানে কোনো রাজাকার কিংবা পাঞ্জাবী সৈন্য দেখেছে কিনা।