অকাল পেকেছে যা।
অকালে পেকেছে যা = অকালপক্ক।
যা অবশ্যই ঘটবে।
যা অবশ্যই ঘটবে = অবশ্যম্ভাবী।
পঙ্ক জন্মে যা।
পঙ্কে জন্মে যা = পঙ্কজ।
কুৎসিত আকার যা।
কুৎসিত আকার যার = কদাকার।
যা নিবারণ করা যায় না ।
যা নিবারণ করা যায় না = অনিবার্য।
মানবজীবনে ধন-সম্পদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু ধন-সম্পদের প্রকৃত গুরুত্ব নির্ভর করে মানুষের কল্যাণে ও সামাজিক অগ্রগতিতে তা কাজে লাগানোর ওপর। ধন-সম্পন্ন যদি অপরিমিত পরিভোগ ও বিপুল বিলাসিতায় ব্যয় হয় তবে অর্থ তার মৌলিক উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য হারায়। অপচয় না করে মানবকল্যাণে ও সামাজিক অগ্রগতিতে ব্যয় করতে পারলেই ধন- সম্পদের প্রকৃত মূল্যায়ন হয়। ধন-সম্পদের প্রকৃত তাৎপর্য তার সদ্ব্যবহারের সঙ্গেই সম্পৃক্ত। অর্থ-বিত্তের যারা মালিক তারা অনেকেই এ কথা বোঝেন না বা বুঝতে চান না। অনেকেই নানাভাবে বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হন। তারা সে সম্পদ ব্যয় করেন বিপুল বিলাসিতা ও ভোগ লালসা চরিতার্থতার পেছনে। এ অপব্যয় অর্থের সদ্ব্যবহার নয়। তা ব্যক্তিগত অপরিমিত বিনোদনের খোরাক জোগায় বটে, কিন্তু সমাজের কোনো কাজে আসে না। অপব্যয়ী ও বিলাসীরা ভুলে যান যে, প্রায় ক্ষেত্রেই তারা যে কিন্তু সম্পদের মালিক হন তার পেছনে রয়েছে সমাজের দরিদ্র-নিপীড়িত জনগনের শ্রম। তাদের ধন-সম্পদে সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকার রয়েছে। যে সমাজে মানুষ নিরন্ন ও নিরাশ্রয় অবস্থায় ঝুঁকে ধুঁকে মরে সে সমাজে বিলাসিতায় গা ঢালা রীতিমত অনায়া। দারিদ্র পীড়িত সমাজে বিলাসিতার পেছনে অপরায় কোনো গৌরবের ব্যাপার হতে পারে না। বিলাসিতা এ ক্ষেত্রে সম্পদের অপচয় মাত্র। যে ধন কোল ভোগের পেছনে যায় হয়, সমাজের কোনো কল্যাণে আসে না তা যথার্থ অর্থে ধন নয়। সামাজিক স্বার্থ জলাগুলি দিয়ে সম্পদের অপব্যয় কখনো সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। ধন-সম্পদ মানবকল্যাণে যত বে বায় হয়, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য যদি কাজে লাগানো যায় তবেই ধন-সম্পদের প্রকৃত মূল্যায়ন হয়। সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশে নতুন নতুন কর্মোদ্যোগ গ্রহণ করে উন্নয়ন সাধন করা হলে, মানুষের জন্য কাজের পরিসর বৃদ্ধি করা হলে ধন-সম্পদ সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উত্তরোত্তর সাফল্য নিয়ে আসে। বস্তুত ভোগবিলাসিতা ধনকে অপচয়ের পথে নিয়ে যায়। সমাজের মঙ্গল সাধনের মধ্যেই ধন গায় তার তাৎপর্যময় গুরুত্ব।