স্বাধীনতার আসন্ন সুবর্ণ জয়ন্তী ও আমাদের প্রত্যাশা
১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ বাঙালি মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ লগ্ন। ১৯৭১ সালটাই যেন বাঙালী জাতীয়তাবাদের প্রেরণার উৎস। ২০২১ সালে আমরা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব পালন করব। এই সালে অসত্যের উপর সত্যের, অমানবিকতার উপর মানবিকতার, শোষণ ও অত্যাচারের উপর রুখে দাঁড়ানোর ৫০ বছর পূর্তি হবে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করেই আমাদের নানা জল্পনা-কল্পনা ও পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিকাশ তৈরী হবে। কাজেই ৭১ আমাদের স্বপ্ন ও ১ আমাদের প্রেরণা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ যখন স্বাধীনতার জন্য ডাক দিলেন, তখন বাংলার আপামর জনতা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে এদেশ মাতৃকা হায়েনাদের কবল থেকে রক্ষা করলো। ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের রক্ত এবং ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেলাম স্বাধীনতা। তাই এই স্বাধীনতা বড়ই মূল্যবান। আর আমরা দাঁড়িয়ে আছি একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। স্বাধীনতা অর্জনের পর প্রায় ৪৬ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এই ৪৬ বছর বাংলাদেশকে আমরা কতদূর নিয়ে যেতে পেরেছি তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র পেয়েছি। কিন্তু দীর্ঘ শোষণ আর বঞ্চনার পর আমরা যে পতাকা রচনা করেছি, সেই দেশ মাতৃকার উন্নয়ন ঘটাতে মা পারলে আমালের অর্জনের সবকিছুই যেন ম্লান হয়ে যাবে। ৯০ দশকে জার্মানী একীভূত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জার্মানি ছিল একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানির অর্থনৈতিক কাঠামো প্রায় ভেঙে ফেলা হয়েছিল। সে দেশের সকল ধন-সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলে শত্রু পক্ষ আঘাত হেনে তা প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। আজ ২০১৮ সালে এসে এই জার্মানি ও সেই জার্মানির মধ্যে কোনো মিলই খুঁজে পাওয়া যাবে না। অথচ ইতিহাস বেশি দীর্ঘ দিনের নয়।
১৯৭১ সালের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের দেশে এখন প্রায় ১৮ কোটি লোক বসবাস করে। শিক্ষার হার, মাথাপিছু আয়, মোট দেশজ উৎপাদন প্রভৃতি সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকে উন্নয়ন ঘটেছে। শিক্ষার হার বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬২.৫% মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৬১০ মার্কিন ডলার। মোট দেশজ উৎপাদন গড়ে ৬.৫০%-৭% এর মধ্যেই থাকছে। কিন্তু স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এদেশের সরকার বিভিন্ন লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে। ভিশন ২০২১ তারই একটি অংশ। ২০২১ সালের মধ্যে Least Developed Countries এর তালিকা হতে বাংলাদেশের নাম প্রত্যাহার করানো আমাদের স্বপ্ন। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর এখন আর স্বপ্ন নয়। আর অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আমাদের দেশ মধ্যম আয়ের একটি দেশে রূপান্তরিত হবে। ২০২১ সালের মধ্যে যে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে যে অবস্থানে দেখতে চাই, সেই প্রত্যাশার একটি চিত্র নিচে পয়েন্ট আকারে দেয়া হলোঃ
সবচেয়ে কঠিন জিনিসটি হলো কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া, বাকিটা শুধু ধৈর্য । ভয় হলো কাগজের বাঘ। আপনি সিদ্ধান্ত নিয়ে যেকোন কিছু করতে পারেন, আপনার জীবন পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ করতে আপনি কাজ করতে পারেন আর কঞ্জ করার প্রণালী ও প্রক্রিয়া নিজেই তার পুরস্কার। অতীত নিয়ে চিন্তা করবেন না, বর্তমানে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে মনোনিবেশ করবেন। নিজেকে জানাই শুধু জীবন নয়, নিজেকে সৃষ্টি করাটাও জীবন। প্রত্যেকেরই মনে রাখা উচিৎ সফলতার চূড়ান্ত/ শেষ নয় আর ব্যর্থতাই সবকিছুর শেষ নয়, সেই সফলতা বা ব্যর্থতা নিয়ে টিকে থাকাই সাহসিকতা।
সকল পথ হারানো মানুষ হারিয়ে যায় না।
একজন সাহসীকে ধ্বংস করা যায়, কিন্তু পরাজিত করা যায় না।
ভালবাসা এবং ভালোবাসা পাওয়াই জীবনের একমাত্র সুখ।
গুণীজন কথা বলে কারণ তাদের কিছু বলার থাকে আর বোকারা কথা বলতে হয় বলে কথা বলে।
শিক্ষা মনকে কখনো নিঃশেষ করে না।
২০.০১.২০১৮
বরাবর
চেয়ারম্যান
অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
মতিঝিল, ঢাকা।
বিষয়ঃ কর্পোরেট সোশাল রেসপনসিবিলিটি কার্যক্রমের আওতায় নতুন বিষয়ে প্রস্তাব প্রণয়ন প্রসঙ্গে।
জনাব,
আপনার সদয় অবগতির জন্য আনন্দের সাথে জানানো যাচ্ছে যে, কর্পোরেট সোশাল রেসপনসিবিলিটি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাংকের সাফল্য ঈর্যাজনক। বিগত বছরগুলোতে আমাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সফলতার সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে আমাদের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম অগ্রগণ্য। বর্তমান প্রচলিত কার্যাবলির পাশাপাশি আমরা নিম্নলিখিত কার্যক্রমগুলো যুক্ত করতে পারিঃ
ক. বন্যাদুর্গতদের পূর্ণবাসন ব্যবস্থা।
খ. প্রাকৃতিক দূর্যোগ ক্ষতিগ্রস্থ সম্প্রদায়কে আর্থিক সহায়তা।
গ. ছিন্নমূল শিশু-কিশোরদের শিক্ষা ব্যবস্থা।
ঘ. এসিড দগ্ধ নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি।
ঙ. নদী ভিত্তিক বেদে সমাজের মানুষের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।
আমাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের প্রচলিত সোসাল রেসপনসিবিলিটি কার্যক্রমের সাথে উপরোক্ত কার্যক্রমগুলো যুক্ত করলে সামাজিক সমৃদ্ধি সাধিত হবে বলে মনে করি।
সবিনয়ে,
আশরাফুল কবির
ব্যবস্থাপক অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড
মানিকগঞ্জ শাখা।