Joint Recruitment Test for 3 Banks || Officer (Cash) (16-11-2018) || 2018

All

১৬.১১.২০১৮

নির্বাহী প্রকৌশলী
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড,
মুলজান, মানিকগঞ্জ ৷

বিষয়ঃ মানিকগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শিবালয় থানার দশচিড়া গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আবেদন ।

জনাব,
যথা বিহীত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক জনাবের কাছে বিনীত নিবেদন এই যে, শিবালয় থানার টেপড়ার দশচিড়া গ্রামে পাঁচ হাজার মানুষের বসবাস হলেও আজ পর্যন্ত সেখানে মানুষ বিদ্যুতের মুখ দেখেনি। দুটি প্রাইমারী এবং একটি হাইস্কুলে প্রায় ১,৫০০ ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করে। এছাড়া এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় কৃষিকাজ সহ নানা ধরনের ক্ষেত্রে ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় কৃষকরা গভীর নলকূপ বসিয়ে জমিতে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করছে যা খুবই শ্রমসাধ্য ও ব্যয়বহুল এবং এতে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ উৎপাদন হয় না। এছাড়া সম্প্রতি চুরি-ডাকাতির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে চলছে অবিরত বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারে সহজেই এরা পার পেয়ে যাচ্ছে। 

অতএব মহোদয়ের নিকট বিনীত অনুরোধ আমাদের এই সম্ভবনাময় গ্রামে আধুনিকতার নিদর্শন এই বিদ্যুতের সংযোগ ঘটিয়ে এলাকাবাসীকে কৃতজ্ঞতা পাশে বাধিত করতে আপনার একান্ত মর্জি হয়।

বিনীত নিবেদক
দশচিড়া গ্রামের বাসিন্দা
টেপড়া, শিবালয়, মানিকগঞ্জ ।

দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা

অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের এই যুগে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে একটি দক্ষ জনশক্তির ভূমিকা অপরিসীম। জনশক্তি দক্ষ হলে শুধু দেশেই না, তা বিদেশে কর্মরত থেকে দেশের জন্য রেমিটেন্স ও সম্মান এনে দিতে পারে। আর এই দক্ষ জনশক্তি আপনা-আপনি গঠিত হয় না। এর পেছনে অনুঘটক (Catalyst) হিসেবে কাজ করে শিক্ষা। যে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যতটা উন্নত, সেই দেশের দক্ষ জনশক্তির পরিমাণ তত বেশি। অর্থাৎ একটা দেশের জনসংখ্যা দক্ষ না কি অদক্ষ হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে ঐ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর। শিক্ষা ব্যবস্থাই বর্ধিত জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে পারে। আবার এই শিক্ষা ব্যবস্থাই শত শত গ্র্যাজুয়েট কেরানির জন্ম দিতে পারে। জনশক্তি তৈরীতে পুরাতন কারিকুলাম এখন আর তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারে না বলেই বাংলাদেশে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ বেকার যুবকের সৃষ্টি হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থা যদি যুগপযোগী ও বাস্তব এবং ব্যবহারিকমুখী হতো তাহলে আর এই যুব সমাজ শুধু চাকরির পেছনে ছুটতো না। শুধু আমাদের এই শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে এই মহাদেশের ভারত, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, ভূটানের পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ জনশক্তি তৈরীতে। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, কারিগরি শিক্ষার যে দাপট সরাবিশ্বে চলছে, বাংলাদেশে তার ছোঁয়া এখনো লাগেনি। এদেশের কারিগরি শিক্ষা এখনো Mainstream এ আসতে পারেনি। এই অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে Digital Bangladesh এর যে সম্ভাবনা, তা থেকে আমরা সুবিধা নিতে পারব না ।

UGC এর হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৮টি পাবলিক ও ৮২টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। ৮২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭/৮টি বাদে অধিকাংশের মধ্যে ১০টির বেশি শিক্ষা বিভাগ নেই। যেডুলো আছে তাতে গবেষণা বা শিক্ষার মান নির্ণয়ের কোনো মাপকাঠিই নেই। সেজন্য বলা যায় বাংলদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে সত্য, কিন্তু শিক্ষার মান সে পর্যায়ে বাড়েনি। আর এজন্যই এদেশে দক্ষ জনশক্তি সেভাবে সৃষ্টি হচ্ছে না ।

আমাদের GDP'র ১৫ শতাংশ কৃষি নির্ভর। শিল্প খাতে এই হার ২৮ শতাংশ এবং সার্ভিস সংশ্লিষ্ট খাতে এই হার ৫৬ শতাংশ। ধরে নেয়া হচ্ছে আগামী ১০ বছরে শিল্পায়নে GDP'র হার হবে ৩৫ শতাংশ। তবে কর্মমুখী শিক্ষার প্রসার ও প্রয়োগ যথাযথভাবে না হলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না, সৃষ্টি হবে না দক্ষ জনশক্তি। কাজেই বেকারত্ব কমানোর জন্য ও কারিগরি শিক্ষার প্রসারের জন্য সকলের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শ্রমজরিপ অনুযায়ী দেশে বর্তমানে প্রকৃত বেকারের সংখ্যা চার কোটি ৮২ লাখ (২৮ মার্চ, ২০১৮ যুগান্তর)। একটি দেশের কর্মক্ষম লোক সংখ্যার মধ্যে ৪ কোটি ৮২ লাখ যদি বেকার অবস্থায় থাকে, তাহলে সেই দেশ কিভাবে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হবে। দেশ এই বেকার যুবকদের থেকে উপকার নিতে পারছে না। এজন্য শুধু কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগই দায়ী নয়, এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাও অনেকটা দায়ী।

বিদেশে বাংলাদেশের প্রায় ৮০ লাখ কর্মী কাজ করছে এবং আরো বিপুল জনশক্তি বিদেশে যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছে। এদেরকে দক্ষ করে বিদেশে পাঠাতে না পারলে বিভিন্ন পেশায় কাজ করে এরা সুনাম বয়ে আনতে পারবে না। এজন্য তাদেরকে যথাযথ শিক্ষা, প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে বিদেশে পাঠালে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে উপকার পাবে। এজন্য প্রযুক্তিমুখী, কারিগরি ও বাস্তবজ্ঞানের বিকল্প নেই।