শুভেচ্ছা
শুভেচ্ছা = শুভ+ ইচ্ছা
'পাগলে কি না বলে'
কর্তায় ৭মী বিভক্তি
'ত্রিফলা'
ত্রিফলা = তিন ফলের সমাহার দ্বিগু সমাস
'গোরা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সভ্যতার উষালগ্ন থেকেই মানুষ ছিল অসহায়। সেই অসহায় অবস্থা উত্তরণে কাছে করেছে তার প্রবল ইচ্ছাশক্তি। এই ইচ্ছাশক্তির বলেই পৃথিবীতে মানুষ আজ অন্যান্য জীব থেকে শ্রেষ্ঠ। হিংস্রো পশুর হাত থেকে বাঁচার তীব্র বাসনা থেকেই যখন মানুষ পাথরের হাতিয়ার আগুন আবিষ্কার করলো, তা থেকেই মানুষের আবিষ্কারের নেশা তীব্রতর হয়। আবিষ্কারের সেই তীব্র বাসনা বা ইচ্ছা শক্তির কারণেই সভ্যতা আজ এই পর্যায়ে উন্নীত। বস্তুত ইচ্ছা শক্তির জোরেই মানুষ জ্ঞান-বিজ্ঞানের চরম শিখরে পৌঁছেছে। এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে গিয়ে বসবাস করার চিন্তা করছে।
পাহাড় চূড়া থেকে সমুদ্র তলদেশ পর্যন্ত বিচরণ করছে। জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিক্ষা- সংস্কৃতির সব ক্ষেত্রে প্রতিটি আবিষ্কারের পেছনে রয়েছে ইচ্ছাশক্তি। নদীর উপর ভেসে থাকার ইচ্ছা থেকে মানুষ তৈরি তেলা, নৌকা, জাহাজ আকাশে ওড়ার বাসনা থেকে তৈরি করেছে উড়োজাহাজ। রোগ থেকে বাঁচার বাসনা থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে ঔষধ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ইচ্ছা শক্তির বলে বলীয়ান হয়ে মানুষ অধ্যবসায়ে হয়েছে মনোযোগী পেয়েছে চিত্তের একাগ্রতা যা মানুষকে তার সাফল্যের চরম শিখরে পৌঁছে দিয়েছে।
ইচ্ছাশক্তি মানুষের মনোবলকে দৃঢ় করে এবং কাজে সাফল্যের যোগায়। ইচ্ছা না থাকলে এক ধরনের জড়তা কাজ করে মানব হৃদয়ে। ফলে কোনো আকা না। ইচ্ছাশক্তি প্রচন্ড শক্তিশালী যেকোনো বাধা তার কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য হয়। পৃথিবী জয় করার প্রবল ইচ্ছা থেকে নেপোলিয়ন ইউরোপ জয় করেছিলেন, আব্রোহাম লিংকন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি হতে পেরেছিলেন। স্বাধীন হওয়ার তীব্র ইচ্ছা থেকেই আমরা স্বাধীনতা লাভ করি।